কাজির বাজার ডেস্ক
আগামী বছরের ২ মার্চের পর থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই তথ্য অনুযায়ী তাঁরা ২০২৬ সালের ২ মার্চের চ‚ড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকায় ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন। তবে এর আগে আইন অনুযায়ী, আগামী বছরের ২ মার্চ চলতি বছরের হালনাগাদ চ‚ড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
আইন অনুযায়ী, প্রতিবছর ২ জানুয়ারি আগের বছরের হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করা হয়। ২ মার্চ প্রকাশ করা হয় চ‚ড়ান্ত তালিকা। তবে এ বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ভোটার হওয়ার উপযুক্ত কোনো ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে ইসি কার্যালয়ে গিয়েও ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। আবার নির্বাচন কমিশন বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদের সময় আগাম তথ্যও সংগ্রহ করে রাখে। বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, নতুন ভোটার হিসেবে যুক্ত হওয়ার জন্য ইসির কাছে ১৭ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহে রয়েছে। এসব নাগরিক ২০২৫ সালে যে তালিকা প্রকাশ করা হবে, সেখানে তাঁরা যুক্ত হবেন। এই ১৭ লাখ নাগরিকের মধ্যে ১৩ লাখের তথ্য নির্বাচন কমিশন ২০২২ সালে সংগ্রহ করেছিল। বাকি নাগরিকেরা নিজেরা ইসির কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধিত হয়েছেন। তবে তাঁদের ধারণা, পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছর ৪৫ লাখের মতো নাগরিকের নতুন ভোটার হিসেবে যুক্ত হওয়ার কথা। সে হিসাবে ২৭ থেকে ২৮ লাখ ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিক এ বছর এখনো ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হননি।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এই বাস্তবতায় কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ২ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশের পর শুনানি, দাবি-আপত্তির পর ২ মার্চ চ‚ড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ইসি চায়, যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁরা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হোক। এ জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বাদ পড়া ভোটাররা ছাড়াও ২০২৫ সালে যাঁরা ভোটার হবেন, অর্থাৎ ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যাঁরা ভোটার হবেন, তাঁদের তথ্যও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হবে। তিনি জানান, একই সঙ্গে যেসব ভোটার মারা গেছেন, তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তন করার জন্য তথ্য নেওয়া হবে। এ ছাড়া দ্বৈত ভোটার বা অন্য কোনো জটিলতা আছে কি না, সে বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কবে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে ইসি সচিবালয় থেকে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। তবে তাঁরা ধারণা করছেন, আগামী ২ মার্চের পর এই কাজ শুরু করতে পারবেন। আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখনই কোনো একটি নির্বাচন সামনে আসবে, চেষ্টা থাকবে তফসিল ঘোষণার আগে একটা সময় পর্যন্ত যেন ভোটার হওয়ার যোগ্যদের তালিকাভুক্ত করা যায়। এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইসির বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম এম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে বৈঠকে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ছাড়াও তিন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, তহমিদা আহমদ এবং ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।