স্টাফ রিপোর্টার
জাতীয় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস উপলক্ষে সিলেটে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করেছে সন্ধানী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিট। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, র্যালি, স্বেচ্ছায় রক্তদান, আলোচনা সভা, বিশেষ চক্ষুসেবা, বøাড গ্রæপিং, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও রক্তদাতা সম্মাননা প্রদান। শনিবার, ২ নভেম্বর জাতীয় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য- এসো প্রাণের ছোঁয়ায় গড়ি রক্তের বন্ধন চোখের জ্যোতি হয়ে উঠুক প্রাণের স্পন্দন।
সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে র্যালি ও স্বেচ্ছায় রক্তদান, সিলেট সিভিল সার্জন কর্তৃক আয়োজিত র্যালি ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ, ২-৬ নভেম্বর হাসপাতালের চক্ষু বহির্বিভাগে বিশেষ চক্ষুসেবা সপ্তাহ পালন, ৩ নভেম্বর সরকারি আলিয়া মাদরাসায় রক্তদানে উ™‚¢দ্ধকরণ ও স্বেচ্ছায় রক্তদান, ৪ নভেম্বর বøাড গ্রæপিং কার্যক্রম পরিচালনা, ৫ নভেম্বর ভোলানন্দ নৈশ উচ্চবিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং ৬ নভেম্বর আলোচনা সভা ও রক্তদাতা সম্মাননা প্রদান।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে সন্ধানী ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখার সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন, সংস্থার কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্টা ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি সিওমেকহা জোনের সাধারণ সম্পাদক ডা. জাবেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী, সিওমেক ইউনিটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মো. জাকারিয়া হোসেন, সিওমেক ইউনিটের সভাপতি মো. মারুফ হাছান, সাধারণ সম্পাদক মো. লিয়াকত হোসেন রাকিব ও সহসাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান নোমান। মতবিনিময় সভায় বক্তারা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ৩৬টি মেডিকেল কলেজে সন্ধানীর ইউনিট চালু আছে। এটি মূলত মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। সন্ধানীর নানা কার্যক্রমের বর্ণনা দিয়ে তারা জানান, সাধারণ মানুষের মধ্যে নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদান ও স্বেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সন্ধানী অফিসে বিনিময়ের মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ করে থাকে। রোগীর কোনো সুস্থ আত্মীয় অন্য গ্রæপের এক ব্যাগ রক্ত দিলে এর বিনিময়ে রোগীকে তার চাহিদা অনুযায়ী গ্রæপের রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়া হয়। গরিব ও অসহায় রোগীদের জন্য সন্ধানী থেকে রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়া হয়। এছাড়া থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরও বিনা শর্তে রক্ত দেওয়া হয়ে থাকে সন্ধানী।
সন্ধানী আরও জানায়, স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীকে ডোনার কার্ড দেওয়া হয়ে থাকে। এই কার্ড সন্ধানীর যে কোনো ইউনিটে দেখালে তাকে রক্ত বিনিময় ছাড়া এক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়া হয়।
এছাড়া সন্ধানী অফিসে অথবা বøাড গ্রæপিং কর্মসুচির মাধ্যমে বøাড গ্রæপ নির্ণয় করা হয়। অনেক সময় বিনামূল্যে বøাড গ্রæপিং কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সন্ধানীর কর্মসূচির মধ্যে আরও রয়েছে মরণোত্তর চক্ষুদান কার্যক্রম। স্বপ্রণোদিত হয়ে মৃত্যুর পর চক্ষুদানের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা হয়। যাতে ভবিষ্যতে তার চোখের কর্নীয় অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারেন।
ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে হেপাটাইটিস বি’ ভ্যাকসিন, জরায়ুমুখের ক্যান্সার ভ্যাকসিন, টিটেনাস ভ্যাকসিন, টাইফয়েড ভ্যাকসিন, জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন ইত্যাদি দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভ্যাকসিনেশন ও ভ্যাকসিনেশনের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পালন করে সাধারণ মানুষের ভিতরে ভ্যাকসিন গ্রহণে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি।
ড্রাগ ব্যাংকের কার্যক্রমও রয়েছে সন্ধানীর। সন্ধানী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিটের ড্রাগ ব্যাংকের নাম ‘অধ্যাপক ডা. আব্দুল হাকিম ড্রাগ ব্যাংক’।
এই কার্যক্রম সম্পর্কে সন্ধানী কর্মকর্তারা জানান, হাসপাতালে আগত যে সব রোগী টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারেন না, তাদেরকে ড্রাগ ব্যাংক থেকে বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করা হয়। এছাড়া এই ড্রাগ ব্যাংকের অধীনে ফ্রি হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়, যার মাধ্যমে অনেক রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকে।
এছাড়াও মেধাবৃত্তি প্রদান, শীতবস্ত্র ও শীতার্তদের কম্বল বিতরণ, বন্যার্তদের সাহায্য, রোজায় ইফতারি বিতরণ, গরীব ও অসহায়দের মাঝে সামগ্রী বিতরণ, সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমের কথাও উল্লেখ করেন তারা।