স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের বাজারে সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম কমছেই না। সপ্তাহ ব্যবধানে নগরীর বাজারগুলোতে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। দাম কমার কোন লক্ষণও দেখছেন না ভোক্তারা। শুক্রবার বন্দরবাজার, লালবাজার, ব্রক্ষময়ীবাজার, শিবগঞ্জ, আম্বরখানা, আখালিয়া, দক্ষিণ সুরমা রেলগেইট, স্টেশন রোড ও কাজিরবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এমন দামে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা। তারা বলছেন- সরকার বদলেছে, তবে বাজার সিন্ডিকেট আগের মতোই আছে। বাজারে সবজি রয়েছে পর্যাপ্ত। মনিটরিংয়ের অভাবে নানা অজুহাতে সিন্ডিকেট দাম বাড়ায় সবসময়। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, সম্প্রতি বন্যায় ও টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত। এতে বাজারে সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-১৫ টাকা করে। এই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বৃষ্টিকে দায়ী করছেন বিক্রেতারা। পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের শর্ত শিথিল ও শুল্ক কমানোর পর দেশে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। তবে আগে যে পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো, তা এখন ১০০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক দিন ধরেই উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। এখন ডিমের দাম আরেকটু বেড়েছে। গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা বেড়েছে ডজনে। ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হচ্ছে ডিম। গরিবের আমিষ বলা হলেও সীমিত আয়ের মানুষের সামর্থ্যরে বাইরে চলে যাচ্ছে এ পণ্য।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারগুলো শাক-সবজিতে ভরপুর। দোকানিরা কাঁচামরিচ, বেগুন, শসা, পটল, বরবটি, কচুর লতি, ঢ্যাঁড়শ, কাঁকরোল, পেঁপে, করলা, শিম, গাজর, মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির পসরা সাজিয়েছে বসেছেন। তবে কোনটার দামই ভোক্তা সাধারণের নাগালে নেই।
জানা গেছে- নগরীতে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজিতে। কাঁচামরিচের দাম কেজি প্রতি ৪০০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ৩৭০-৩৮০ টাকায়। আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে, ছিলো ৫০-৫৫ টাকা। শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ৬০-৭০, করোলা ৬০-৭০, কচুমুখি ৫০-৬০, বরবটি (লুবি) ৬০-৭০, পটল ৫০, মুলা ৭০, থাল বেগুন ৮০, ফুল কপি ১২০ ও জালি কুমড়ো ৭০-৮০ টাকা করে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির দাম গত সপ্তাহে ১০-২০ টাকা কম ছিলো বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
পণ্য কিনতে আসা এক ক্রেতা জানালেন, সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় বাধ্য হয়ে ক্রয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হচ্ছে। এক কেজির জায়গায় কিনতে হচ্ছে আধা কেজি। দুই কেজির জায়গায় এক কেজি। এর ফলে খাওয়াও কমাতে হচ্ছে। বাজার মনিটরিং না বাড়ালে ও সিন্ডিকেট না ভাঙলে আমরা স্বল্প আয়ের মানুষকে হয়তো আগামীতে এক বেলা খেয়েই দিন কাটাতে হবে। এ বিষয়ে বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান তিনিসহ বেশ কয়েকজন সবজি ক্রেতা।
নগরীর বন্দরবাজারে লায়েক আহমদ নামের সবজি বিক্রেতা বলেন- অনেকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে সিলেট বিভাগজুড়ে, এর প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে- বেড়েছে দাম। বৃষ্টি কেটে গেলে কিছুদিনের মধ্যেই সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।