শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো ছয়টি মামলা

4

কাজির বাজার ডেস্ক

সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম, মিঠু ওরফে মারুফসহ তিনজন নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১ হাজার ৩৯ জনের নামে পৃথক ৩টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার রাতে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন নিহত শিক্ষার্থীর মা কুলছুম। এ মামলায় ৬৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য নিহত শিক্ষার্থীর পিতা শাহাজান ইসলাম একটি মামলা করেন। তার মামলায় ১৩১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া মঙ্গলবার সকালে সাভার মডেল থানায় আরও একটি মামলা করেন নিহত শিক্ষার্থীর পিতা ওয়াজেদ আলী। এ মামলায় ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক সাংসদ তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদসহ ১ হাজার ৩৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দেড় হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ডেমরার সানারপাড়ে মিরাজ হোসেন ও মোহাম্মদপুরের বছিলায় বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশনের মেশিন অপারেটর মনসুর মিয়া এবং মিরপুরে নাহিদুলকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। তিনটি মামলাই আদালত এজহার হিসাবে গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ তিন মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে মঙ্গলবার মিরাজ হোসেনকে হত্যার অভিযোগে ৯২ জনকে আসামি করে খোরশেদ আলম মিয়া একটি মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ডেমরা থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির হারুন-অর-রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার।
এদিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মনসুর মিয়া হত্যা ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে তার ভাই আয়নাল হক অপর মামলাটি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সালমান এফ রহমান, সাদেক খান, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাবিবুর রহমান, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার, হারুন অর রশীদ, ড. খ মহিদ উদ্দিন।
অপরদিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে নাহিদুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনকে আসামি করে তার ভাই সবুজ একটি হত্যা মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মিরপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফজলে নুর তাপস ও ফজলে শামস পরশ।
মনসুর হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মনসুর মিয়া মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকায় তার সন্তানকে মাদ্রাসা থেকে আনতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নাহিদুল হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চলাকালে মিরপুর গোলচত্বর এলাকায় নাহিদুলকে শেখ হাসিনার নির্দেশ গুলি করে হত্যা করা হয়।