শাবি সংবাদদাতা
তুমুল বৃষ্টিতে ভিজে কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিল শেষে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে সমবেশে মিলিত হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সেøাগান দিতে থাকে। এ সময় শিক্ষার্থীরা গানে গানে কোটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে থাকে।
এ সময় কোটা বৈষম্যবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলের বিভিন্ন সেøাগানে উত্তাল হয়ে পড়ে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। ‘সাস্টিয়ান সাস্টিয়ান’, ‘এক হও লড়াই করো’। ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা’। ‘হাইকোর্টের রায় মানি না মানব না’। ‘কোটা বাতিল কর, বাতিল কর’, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’। ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’। ‘দাবি এক দফা এক, কোটামুক্ত বাংলাদেশ’। ‘প্রশ্ন ফাসের বিরুদ্ধে, একশন একশন’। এমন নানা রকম সেøাগানসহ কোটা প্রথা বাতিলের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
সেøাগান শেষে বক্তারা বলেন, ‘কোটার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা চাকরি পাচ্ছে না। দেশের ১০ ভাগ মানুষের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি চাকরি মাত্র ০ দশমিক ১৪ ভাগ মানুষের দখলে। আর বাকি ৯ দশমিক ৮৬ ভাগ মানুষের জন্য কেন ৫০ শতাংশেরও কম চাকরির সুযোগ? এ বৈষম্য কবে দূর হবে? চাষার ছেলে আজীবন কী চাষায় থাকবে? গরীবের ছেলের কি পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করতে ইচ্ছে করে না? দেশটাকে আর কত শোষণ করবেন? কেটে খাওয়া মানুষের রক্ত আর কতদিন চুষে খাবেন? আমাদের অধিকার আর কত খর্ব করবেন? আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের আর পেছনে যাওয়ার রাস্তা নেই।’
বক্তারা আরও বলেন, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে কোটার পাশাপাশি দুর্নীতি নিয়ে আমাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। আমরা দিনরাত এক করে পড়াশোনা করব, আর কোটাধারীরা ৫৬ শতাংশ সিট নিয়ে নেবেন। আর যাদের টাকা আছে তারা প্রশ্ন কিনে নেবেন।
আমরা যারা সাধারণ শিক্ষার্থী আছি তারা আসলে করবটা কি? আমাদের মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। প্রকৃতপক্ষে, দেশটার উপরের খোলসটা আছে, ভিতরে ফাঁপা। ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল পর্যন্ত আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’