কমলগঞ্জের ধলাই নদীতে ভাঙন আতঙ্ক

3

 

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পর খরস্রোতা ধলাই নদীতে ব্যাপক আকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি ও কমে যাওয়ার পর নদীতীরবর্তী বেশ কিছু গ্রাম ও বাড়িঘর নদীতে বিলীন হওয়ার পথে।
ধলাই নদীর ৬০ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে বিলীন হয়ে যাওয়াতে উপজেলার ইসলামপুর, মাধবপুর, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, মুন্সীবাজার, রহিমপুর ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বেশ কিছু এলাকা ভাঙন হুমকিতে পড়েছে। এদিকে উপজেলার পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে ধলাই নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ভাঙনে নদীতীরবর্তী রমিজ আলী, আবেদা বেগমসহ তিনটি পরিবার বাড়িঘর সরিয়ে নিলেও হোসেন আলী, হেলাল উদ্দীন, মজিদা বেগমসহ চার পরিবার তাদের বাপ-দাদার ভিটা হারানোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামের সমাজকর্মী তাজউদ্দিন আহমেদ জানান, জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এবং চলতি মাসের গত সপ্তাহে আকস্মিক বন্যা ও নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পশ্চিম ঘোড়ামারা এলাকার নদীর তীরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঈদুল আজহার পর কমলগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। এ সময় কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, মুন্সীবাজার ও রহিমপুর ইউনিয়নে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এতে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা বন্যাকবলিত হয়। একই সময়ে খরস্রোতা ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের দু’তীরে দেখা দেয় ধস ও ফাটল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজানের পাহাড়ি ঢল এবং একের পর এক বন্যার তোড়ে সৃষ্ট ভাঙনে নদীর দুই পাড়ের ৬০ কিলোমিটার বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একইসঙ্গে নদীর ৩৮ কিলোমিটার বাঁধ পুরোটাই নড়বড়ে হয়ে আছে। জুনের পাহাড়ি ঢলে চৈত্রঘাট, চৈতন্যগঞ্জ, ল²ীপুর গ্রামসহ নতুন-পুরান মিলিয়ে নদীর অন্তত আটটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। এ ভাঙনে এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামের হোসেন আলী জানান, নদীতে সর্বস্ব বিলীন হওয়ায় তিনটি পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আরও চারটি পরিবার অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে।
আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন জানান, ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পশ্চিম ঘোড়ামারাসহ ইউনিয়ন এলাকার চারটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক এলাকায় বসতঘর বিলীন হচ্ছে নদীতে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর এবং পানি কমতে শুরু করলে বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। এতে অনেক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রতিরক্ষা বাঁধও। স্থায়ীভাবে ধলাই নদীর ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ৫৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায়। এটি বাস্তবায়ন হলে ধলাই নদীর ভাঙন তীব্রতা অনেকটাই কমে যাবে।