শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্রগুলো

5

স্টাফ রিপোর্টার
শর্তসাপেক্ষে সিলেট ও সুনামগঞ্জের সব পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকা সাপেক্ষে এসব পর্যটনকেন্দ্রগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গোয়াইনঘাটঃ সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ও রাতারগুর পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। রবিবার উপজেলা পর্যটন কমিটি জাফলং পর্যটনকেন্দ্রগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে গত শুক্র ও শনিবার দুই দফা গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভুমি) সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের একটি টিম পর্যটনকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে। তবে জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে নৌ-চলাচলের রুটে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সকল বোট মালিক, নৌ চালক-মাঝিদেরকে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। জাফলংয়ে পিয়াইন নদীর পানির গভীরতা ও স্রোত বিবেচনাহ সাঁতার জানে না এবং ১২ বছরের কম বয়সীদের নিয়ে জাফলং ট্যুরিস্ট স্পটে নৌকায় চলাচল করা যাবে না। ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধানের জন্য বলা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো শর্তসাপেক্ষে রবিবার দুপুর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও নৌকার মাঝিসহ সকলকে অবশ্যই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। উল্লেখ্য, বন্যা দেখা দেওয়া গত ১৭ জুন সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
কোম্পানীগঞ্জঃ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। রবিবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভা শেষে পর্যটনকেন্দ্রটি খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে সেক্ষেত্রে মানতে হবে ৮টি শর্ত। সভা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক সুনজিত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- নির্দেশনা না মানার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
সাদাপাথর খুলে দেয়ার শর্তগুলো হলো- নদীর স্রোতের তীব্রতা বাড়লে কোন অবস্থাতেই ঘাট থেকে নৌকা ছেড়ে যাবে না, সেক্ষেত্রে সম্মানিত পর্যটকগণ আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখে যেতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট দিনের নদীর স্রোত ও সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নৌকা ঘাট থেকে ছেড়ে যাবে কিনা তা ঘাটে অবস্থিত খাস আদায় কমিটির সিদ্ধন্তই চ‚ড়ান্ত বলে গণ্য হবে; সকল নৌকাতেই লাইফ জ্যাকেট থাকতে হবে এবং লাইফ জ্যাকেট পড়িয়ে নৌকা ঘাট হতে ছাড়তে হবে। পর্যটকগণ কিছুতেই পানিতে নামতে পারবেন না বা পানিতে নেমে সাঁতার কাটতে পারবেন না; পর্যটকগণ নৌকায় উঠে হৈ হুল্লুর করতে পারবেন না, নৌকায় উঠে শু-শৃঙ্খলভাবে বসে থাকবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে মহিলা ও শিশু পর্যটকগণ আপাতত নৌকায় ভ্রমণ করতে পারবেন না। মাঝিগণ সম্মানিত পর্যটকগণের সাথে সর্বদা ভালো আচরণ করবেন ও পর্যটন স্পটের নির্দিষ্ট স্থানে দোকান-পাট বসাতে হবে। এর আগে গত মঙ্গলবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় উপজেলার সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সুনামগঞ্জঃ সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। রবিবার দুপুরে এ ঘোষণা দেয় তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা পারভীন জানান, সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি এবং যাদুকাটাসহ নদ-নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে কোনো পর্যটক এসে যাতে খারাপ পরিস্থিতি বা বিপদে না পড়েন এসব বিষয় মাথায় রেখে ও পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত কয়েকদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় যেহেতু বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে তাই রবিবার থেকে আবারও টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ও বিশ্বম্ভপুর উপজেলার দুর্গাপুর, শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ারপুর সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাহিরপুরের সঙ্গে সুনামগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার ১৮ জুন বন্যা পরিস্থিতিতে কোনো পর্যটন যাতে খারাপ পরিস্থিতিতে না পড়েন এবং বন্যা পরিস্থিতিতে এসে তাহিরপুরের আটকা না পড়েন তাই তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়।