শাবি প্রতিনিধি
সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহারের দাবিতে তিন দিনের টানা অর্ধদিবস কর্মবিরতির শেষ দিনেও দাবিতে অনড় অবস্থানে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর কবীরসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
শাবি শিক্ষক সমিতির নেতারা তাদের দাবি তুলে ধরে বলেন, শিক্ষকদের আত্মমর্যাদা এবং গৌরব রক্ষায় গত মে ২০২৪ থেকে গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, কালোব্যাজ ধারণ, অবস্থান কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, অদ্যাবধি যথাযথ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের অবস্থান করার কথা ছিলো ক্লাসে, ল্যাবে, গবেষণায় কিন্তু আজ আমাদেরকে অবস্থান করতে হচ্ছে রাস্তায়, এটা একটা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার লজ্জার ফসল।
একটা দেশে দুই নীতি চলতে পারেনা। প্রত্যয় নাম দিয়ে শিক্ষকদের সাথে যেভাবে অবজ্ঞা আর অবহেলা করা হচ্ছে তাতে দেশ মেধাশূন্য হবে। ডিপার্টমেন্টের ভালো ভালো মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে আমরা ধরে রাখতে পারছিনা, গ্রাজুয়েট শেষ করে তারা দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার একটাই কারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় অবমূল্যায়ন।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর কবীর বলেন, আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। আমাদের দাবি মেনে নিয়ে আমাদেরক ক্লাসে ফেরার সুযোগ দিন। শিক্ষকরা তাদের মর্যাদা লড়াইয়ে আজ রাস্তায় নেমেছে। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করেই যাব। তাই আমাদের দাবি মেনে নিয়ে দেশের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমাদেরকে ক্লাসে ফেরার সুযোগ দিন।
এদিকে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি দুপুর ১২ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। তবে চলমান পরীক্ষাগুলো কর্মবিরতির আওতার বাইরে ছিল। সিকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভ‚ইয়ার সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। ৩০ জুন আমরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করব। চাপিয়ে দেওয়া প্রত্যয় স্কিম বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শিক্ষকদের মাঝে বিরাজমান উৎকন্ঠা ও অসন্তুষ্টি লাঘব করে অনতিবিলম্বে উপরি-উক্ত দাবি সমূহ বাস্তবায়ন করে দ্রæত শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্টমহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।