নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে একসাথে সাবেক ও বর্তমান মেয়র

5

স্টাফ রিপোর্টার
বৃষ্টি হলেই সিলেট নগরীতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ছড়া ও খাল ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়া। এ অবস্থায় শনিবার একসাথে নগরীর বিভিন্ন ছড়া পরিদর্শন করেন সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র মোঃ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
গত বছর অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র নির্বাচিত হন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। আর দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে ওই নির্বাচনে অংশ নেননি সিলেট সিটির টানা দুইবারের মেয়র বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী।
বন্যা ও জলাবদ্ধতায় নগরবাসীর উপর্যোপরী দুর্ভোগের প্রেক্ষিতে শনিবার বেলা ৩ টায় তারা দুজন নগরীর স্টেডিয়াম এলাকা সংলগ্ন মাদার কেয়ার হাসপাতালের পাশের বৈটাখাল ছড়া পরিদর্শন করেন। এসময় ছড়ায় পানি প্রবাহে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তদারকি করেন এবং সমস্যা সমাধানে একে অপরকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র মোঃ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নগরীর ভেতর ২৩টি ছড়া আছে ১৯৫৬ সালের ম্যাপ ধরে আমরা কাজ করবো। নগরীর সমস্ত ছড়া উদ্ধার ও খনন করে সুরমা নদীর সাথে সংযুক্ত করবো এবং সুরমা নদী খনন করা হবে। শুধু সিটি কর্পোরেশন এলাকা খনন করলে হবে না। উৎপত্তিস্থল থেকে খনন কাজ করতে হবে।
সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি আন্তরিকতার সাথে আমাকে সহযোগিতা করছেন। তার ১০ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা কাজ করবো এবং তিনি কোথায় কোথায় প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন সেগুলোও আমাকে অবহিত করছেন।
মেয়র আনোয়ারুজ্জামান আরও বলেন, নগর বাঁচাও, সিলেট বাঁচাও এই সেøাগানকে সামনে নিয়ে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ নগরীকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সিলেটের স্বার্থে আমরা দলমত নির্বিশেষে সবাই একমত। নগরীর মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। আমরা জনগণের প্রতিনিধি। আমরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। কিছু সংখ্যক মানুষের স্বার্থে সিলেট শহর ঢুবে যাবে বৃহৎ নগরবাসীর ভোগান্তি হবে সেটা আমরা মেনে নিবো না। যারা ছড়া দখল করে বসে আছেন তাদের প্রতি আহŸান জানিয়ে তিনি বলেনÑ আপনারা নিজ নিজ দায়িত্বে ছড়া ছেড়ে দিন। নাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ছড়া উদ্ধার করবো। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সিলেট নগরী রক্ষায়, প্রবাসীদের জান মাল রক্ষায় এবং সিলেটে বিণিয়োগ রক্ষায় আমরা বদ্ধ পরিকর। কোন দখলবাজ বা সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বহু বছর ধরে আমরা দেখছি নগরীর মানুষ পানিবন্দি হয়ে যান এবং মালামাল নষ্ট হয়ে যায় এটি আর দেখতে চাই না। তবে এটি একা সিটি কর্পোরেশনের দায় নয়। যে সকল ছড়া, খাল সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ কিছু ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে। তারা যদি নগরবাসীর কথা বিবেচনা করে এগুলো ছেড়ে দেন তাহলে তাদের স্বাগত জানাবো অন্যথায় বর্তমান মেয়র তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ছড়াগুলো উদ্ধার করা গেলে সিলেটবাসী বন্যার কবল থেকে অনেকটা রক্ষা পাবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের সাথে যদি তুলনা করেন তাহলে দেখবেন সিলেট অনেক পিছিয়ে। এর মূল কারণ হচ্ছে আমাদের নেতৃত্বের অভাব। আমার বিশ্বাস বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মধ্যে এই নেতৃত্ব গুণ আছে। তিনি দায়িত্ব নিয়ে সিলেটের উন্নয়ন করতে পারবেন। সিলেট সিটির মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করলে মূল উৎপত্তি স্থল থেকে নগরীর ছড়া সরকারি ভাবে খননসহ শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ করা যায় তাহলে এর লাঘব হবে। কালক্ষেপণ না করে একটা একটা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমরা আশা করি আগামী ৪ বছরের মধ্যে সিলেটে অনেক বেশি উন্নয়ন হবে। নগরীর স্বার্থে শুধু আমি কেন, অন্যান্য যারা আরও দায়িত্ববান ও রাজনীতিবিদরা আছেন সবাইকে এগিয়ে আসার আহŸান জানান আরিফুল হক চৌধুরী।
এসময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মোঃ মখলিছুর রহমান কামরান, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম আহমদ, দেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মিসবাউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।