কাজিরবাজার ডেস্ক :
মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের মানুষের জন্য এক শ’ ডিজিটাল সার্ভিস দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। দেশের মানুষ এর আগে ৪০ ধরনের সেবা পেয়েছেন। এবার আরও ৬০ ধরনের সেবা যুক্ত হচ্ছে। সরকারী এসব এখন মোবাইলেই পাওয়া যাবে। মুজিববর্ষকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে একটি ‘লোগো’ উন্মোচন করেছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। নির্মিত হয়েছে একটি ওয়েবসাইট। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্ষটি স্মরণীয় করে রাখতে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। মানুষের জন্য কাজ করলে এবং সেবা দিলে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এজন্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি জনগণকে সেবা দেয়া যায় এমন একশ’ নাগরিক সেবা খুঁজে বের করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আইসিটি বিভাগ কয়েক দফা মূল্যায়ন করেছে। মানুষের কাজে লাগে এমন কিছু সেবা মুজিববর্ষে দেয়া হবে। বর্তমানে ৪০ ধরনের সেবা মানুষ পেয়ে আসছেন। কয়েকদিনের মধ্যে ৬০ ধরনের সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে ডিজিটাল ফর্মে উন্মোচন করা হবে। বর্ষটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য এগুলো মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। গত ২৯ ডিসেম্বর আইসিটি বিভাগে জরুরী এক শ’ নাগরিক সেবার বিষয়টি ঘোষণা করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ৫ হাজার ৮৪৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছে। জাতিসংঘের ই-গবর্মেন্ট র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ১১৫তম অবস্থানে উঠে এসেছে (২০০৮ সালে ছিল ১৬২তম)। তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে জাতিসংঘের র্যাংকিংয়ে আরও এগিয়ে যাবে। এক শ’ সেবা নিশ্চিত করতে আইসিটি বিভাগ, একসেস টু ইনফর্মেশন (এটুআই) ও বেসিস (বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন ফর সফটওয়্যার এ্যান্ড সার্ভিসেস) এক সঙ্গে কাজ করছে।
বিষয়টি নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এখন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় নয়, মানুষের হাতের মধ্যেই থাকবে। ওয়েববেজড সেবা থেকে মোবাইল এ্যাপসভিত্তিক সেবার দিকে যেতেই হবে। দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার বাড়ছে। মানুষ এখন তার হাতের মুঠোয় সব সেবা এবং গোটা বিশ্বকে দেখছে। দেশের মানুষ যেকোন জায়গায়, যেকোন সময়, যেকোন ডিভাইস থেকে যেন এসব সেবা পেতে ও ব্যবহার করতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে কাজ করা হচ্ছে। আইসিটি বিভাগ গত ১১ বছরে সরকারের ৬ শ’ টি সার্ভিস অনলাইনে নিয়ে এসেছে। ৪০ হাজার ওয়েবসাইট জাতীয় পোর্টালে যুক্ত করা হয়েছে। সারা দেশে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য এনজিএন টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ চলছে। তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর গ্রামীণ ডাকঘর নির্মাণ, পোস্ট-ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি, ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রানেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গবর্নমেন্ট, বেসিক আইসিটি, অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বিসিসি শক্তিশালীকরণ, লেভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এ্যান্ড গভার্নেন্স, সাপোর্ট টু ডেভেলপমেন্ট কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক, এম্পাওয়ারিং রুরাল কমিউনিটি রিচিং দ্যা আনচিড ইউনিয়ন ইনফর্মেশন এ্যান্ড সার্ভিসেস সেন্টার, যশোর সফট্্ওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্মেন্ট প্রকল্পের কয়েকটি বাস্তবায়ন হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, দেশের সরকারী ১৮ হাজার ৫ শ’ অফিসে কানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে। যে কেউ যে কোন সময় এসব অফিসের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে একটি নতুন খাত হচ্ছে এ্যাকাউন্টিং বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও)। এটাকেই এখন থেকে বেশি করে ফোকাস করা হচ্ছে। এটা যত বেশি প্রচার পাবে তরুণরা তত উৎসাহিত হবে। প্রতিবছর ২২ লাখ ই-মিউটেশন করা সম্ভব হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের কারণে। ৩৫ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে তার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ভূমিসংক্রান্ত। এর মূলে যেসব সমস্যা রয়েছে আইসিটি বিভাগ তা দূর করছে, সহযোগিতা করছে দেশের পাঁচ হাজার ৮৪৫টি ডিজিটাল সেন্টার।