জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, বিশ্বনাথ থেকে :
গত ২২ জুলাই ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে মহীলা কলেজ ভবন নির্মাণে অনিয়ম বের করার পর এবার বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫০শয্যায় উন্নীতকরণ কাজে অনিয়ম খোঁজে বের করলেন স্থানীয় এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া। গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালের নতুন নতুন ভবনের নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নি¤œমানের পাথর, ফাইলিয়য়ের ভাঙ্গা ডাস্ট, প্রত্যেকটি জানালায় ব্যবহার করা হচ্ছে হালকা এঙ্গেল। যা নিজের হাত দিয়ে নিজেই ভেঙ্গে দেখালেন এমপি এহিয়া চৌধুরী। শনিবার বিকেলে প্রাইভেট প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ নিজ দলের নেতাদের নিয়ে রামপাশা ইউনিয়নের কাদিপুরস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের হাসপাতাল নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম দাবি করে বলেন, পাথর, বালি, ডাস্ট তো আছেই, ফিলারের রডের সাথে যেভাবে রিং দেওয়ার কথা সেভাবে দেওয়া হয়নি। ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি পর পর রিং দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ১২ থেকে ১৬ ইঞ্চি পর পর দেওয়া হয়েছে ওই রিং। এছাড়াও কাঁচের জানালায় ব্যবহৃত গ্রীলের এঙ্গেল ৩এমএম’র পরিবর্তে ১.৫ এমএম ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন জানালা মেপে দেখা গেছে ১ ইঞ্চি করে কম রয়েছে। অনিয়মের পাশাপাশি কাজটিতে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এমপি এহিয়া।
এমপি এহিয়া আরও অভিযোগ করেন, তিনি এলাকার লোকজনের অভিযোগ যাচাইয়ে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান এবং অনিয়মের সত্যতা পান। পরবর্তিতে শনিবার সকাল ১০টায় অনিক ট্রেডিং কর্পোরেশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু গতকাল শনিবার হাসপাতালে উপস্থিত না থেকে আরও তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছে ঠিকাদারী ওই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
নির্মাণ কাজের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার অঞ্জন মন্ডল বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতামতের ভিত্তিতেই পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। আর ফাইলিংয়ের ডাস্ট দিয়ে শুধু নিচ ঢালইর কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও গ্রীলের এঙ্গেলসহ সম্পূর্ণ কাজ ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীদের নির্দেশেই যাবতীয় নির্মাণ কাজ চলছে।
এদিকে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনকালে সাংসদের ছোটভাই ও সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য সহল আল্-রাজী চৌধুরী, উপজেলা ভাইস ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নূর উদ্দিন, বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক, স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন, উপজেলা জাপা নেতা হাজী সিতাব আলীসহ নিজ দলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, প্রায়, ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকায় বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১শয্যা থেকে ৫০শয্যায় উন্নীতকরণসহ আরও ৪টি ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে কাজ শুরু হওয়ার পর এরই মধ্যে মেডিকেল অফিসার ডরমেটরি ভবন, ক্লাস-টু ডরমেটরী, অফিসার ডরমেটরি ভবন ও নার্স ডরমেটরি ভবন নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।