হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
হবিগঞ্জে বিরল ‘প্রজেরিয়া’ রোগে আক্রান্ত সেই কিশোরী নীতু আর নেই। বৃহস্পতিবার শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় নিজ বাসায় মারা গেছে সে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১৭ বছর।
১৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করলেও তাকে দেখলে মনে হতো ৬০ বছর বসয়ী এক নারী। নিতুর মুখ ও শরীরের চামড়া কুঁচকানো এবং মাথার সব চুল পড়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতেই বাড়ির পাশে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে নীতু আক্তারের জন্ম হয়। ছয় ভাইবোনের পরিবারে সে চতুর্থ ছিল। তিন মাস বয়স থেকেই তার শরীরের চামড়া শক্ত হয়ে যেতে শুরু করে। তখন স্থানীয় চিকিৎসকদের দেখানো হয়। তারা নানা ওষুধ দিয়েছিলেন, কিন্তু রোগটি ঠিকভাবে কেউ ধরতে পারেননি। পরে পাঁচ বছর বয়সের সময় ঢাকার চিকিৎসকরা জানান, নীতু বিরল প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত।
এ ধরনের রোগীদের বেঁচে থাকার গড় বয়স ১৩ বছর। চিকিৎসকরা জানান, বিরল হলেও বাংলাদেশে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত বেশ কয়েকজন রোগী পাওয়া গেছে। প্রজেরিয়া এক ধরনের জিনেটিক ডিজঅর্ডার, যা বেশ বিরল। চিকিৎসকদের হিসাবে, প্রতি ৪০ লাখে একজনের মধ্যে এ ধরনের রোগ দেখা যায়। তবে এ পর্যন্ত বিশ্বে বড়জোর ১০০ জন প্রজেরিয়া আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা গেছে।
নীতুর বাবা কামরুল ইসলাম বলেন, জন্মের পর কয়েক মাস যেতে না যেতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে নীতু। হাত, পা মুখসহ তার শরীরের চামড়া শুকিয়ে যেতে শুরু করে তখনই। পরিণত হতে থাকে বৃদ্ধদের মতো। পরে চিকিৎসকদের কাছে অনেক ছোটাছুটির পর আমরা জানতে পানি সে প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত।
তিনি বলেন, আমি দ্ররিদ্র মানুষ। তাই সবসময় তার সুচিকিৎসা করাতে পারিনি। কিন্তু স্থানীয় এমপি, জেলা প্রশাসকসহ অনেকে আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তা করেছেন। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
নীতুর মা জোৎস্না বেগম বলেন, আমার মেয়ে নীতুর মত যেন আর কেউ এমন বিরল রোগে আক্রান্ত না হয়।