টিলাধসে স্বপরিবারে মৃত্যু : কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি কাম্য

1

সিলেটে টিলাধসে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। অতিবৃষ্টিতে সিলেট নগরীতে টিলাধসে শিশুসহ একটি পরিবারের তিনজনের মর্মান্তি মৃত্যু হয়েছে। এটি সত্যিই দুঃখজনক।
সোমবার সকালে টিলাধসের ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস, সিলেট সিটি করপোরেশন ও সেনাবাহিনী সাড়ে ৬ ঘণ্টার যৌথ অভিযানে বেলা দেড়টার দিকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। দেখা গেছে, ধসে পড়া ৪০০ ফুট উঁচু টিলাটি কেটে প্রায় অর্ধেক করা হয়েছিল। এরই প্রায় নিচে তিনটি পরিবার ঘর বানিয়ে বসবাস করছিল।
ধসের সময় অন্য দুই ঘরে বসবাসরত আটজনও চাপা পড়ে। তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এ পরিবারের তিন সদস্যকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এমন প্রাণহানি অত্যন্ত দুঃখজনক। টিলাধস রোধে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে দেখা গেলেও তা মূলত সাময়িক। পরিতাপের বিষয়, প্রশাসন স্থায়ী ও টেকসই কোনো পরিকল্পনা নেয় না, ফলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। বরং প্রতিবছরই টিলাধসে প্রাণহানি ঘটে।
আমরা মনে করি, নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও যারা টিলার নিচে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করার চেষ্টা করবে, প্রশাসনের উচিত কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে তাদের অবিলম্বে উচ্ছেদ করা। টিলাগুলোর অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকায় যাতে কোনো স্থাপনা না থাকে, সেদিকে নজর দেওয়া।
পাহাড়ের টিলা কেটে অন্যায়ভাবে ভ‚মির শ্রেণি পরিবর্তন করা ছাড়াও নদীর গতিপথ বন্ধের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছে। সিলেটের একের পর এক টিলা কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে দালানকোঠা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি এ বরষা মৌসুমে যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে, সেদিকে প্রশাসনকে আরো সতর্ক থাকতে হবে।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এ ধরনের কাজ দÐণীয় অপরাধ। কাজেই পরিবেশের স্বার্থেই কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টিতে কঠোর নজরদারি এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী ও তাদের সহযোগীদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া। সিলেটে টিলাগুলো সংরক্ষণের পাশাপাশি এর পাদদেশে যারা বসবাস করেন, তাদের সরিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।