আজ থেকে দীর্ঘ ২৩ বছর আগে যে পত্রিকাটির যাত্রা শুরু হয়েছিল গুণে গুণে আজ সেই পত্রিকাটি ২৩ টি বসন্ত পার করেছে। পা দিয়েছে ২৪ বছরে অর্থাৎ দুই যুগ-এ পর্দাপণ করেছে। একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার জন্য এটি চারটি খানি কথা নয়। এই সময়ে এই শহর থেকে আমাদের সম-সাময়িক কিংবা আগে পরে অনেকগুলো পত্রিকা প্রকাশ হয়েছিল। এরই মধ্যে অনেকগুলো হারিয়েও গেছে। আবার কোনো কোনটির ডিক্লারেশন টিকিয়ে রাখার জন্য মাঝে মধ্যে দু’চার কপি বের হলেও ধারাবাহিক প্রকাশনা খুঁজে পাওয়া যায় না।
বিগত ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনায় যখন দেশের বড় বড় অনেক মিডিয়া হাউজে করুণ অবস্থা চলছিল, ঠিক ঐ সময় কাজির বাজার পত্রিকার নিরবচ্ছিন্ন প্রকাশনা যেমন অব্যাহত ছিল, তেমনি পত্রিকাটির সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতাও পেয়েছেন। যা ঐ সময়ে সিলেটের সাংবাদিক মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
অনলাইন গণমাধ্যম আর রঙিন ছাপার এই যুগে কাজির বাজার পত্রিকা সময়ের সাথে তাল মেলাতে এবং পাঠকের চাহিদা পূরণে নিজেরাও রঙিন এবং স্বচ্ছ ছাপার যুগে প্রবেশ করেছে। যদিও বর্তমান সময়ে ছাপা সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাধির উচ্চমূল্যের বাজারে এটি অনেক কঠিন একটি কাজ। তবে আমরা লক্ষ্য করেছি পত্রিকাটি রঙিন হওয়ার পর এর পাঠকপ্রিয়তা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে এর গ্রাহক সংখ্যা। সকলেই এক বাক্যে বলেছেন অতীতের যেকোনো সময়ের চাইতে রঙিন হওয়ার পর সংবাদ, সেটাপ – গেটাপ ও মেকাপের দিক দিয়ে গত এক বছরে পত্রিকাটির মান ও গ্রহণযোগ্যতা তুলানামূলক এখন অনেক বেড়েছে। পাঠকের এই অনুভূতি নিঃসন্দেহে আমাদের অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করে।
‘সংবাদ প্রকাশে আমরা সকল ভয় ভীতির উর্ধ্বে’ এই ¯েøাগানকে ধারণ করে ২৩ বছর থেকে আমাদের বিরামহীন অবিচল পথ চলার এই মুহুর্তে স্মরণ করছি তাদের যাদের শ্রম নিষ্ঠা ও মেধা এক সময় এ পত্রিকার প্রকাশনাকে সমৃদ্ধ করেছে। তাদের অনেকেই আজ বেঁচে নেই, আবার কেউ কেউ অন্য মিডিয়া হাউজে নতুন কর্মক্ষেত্র বেছে নিয়েছেন কিংবা উন্নত জীবনের আশায় কেউ কেউ প্রবাসে অবস্থান করছেন।
তাদের সম্মিলিত শ্রম, নিষ্ঠা ও মেধার বহিঃপ্রকাশই আমাদের আজকের অবস্থান।
একটি পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রাখতে এর পাঠক প্রিয়তা যেমন জরুরি তেমনি জরুরি বিজ্ঞাপন।
বলা যায় বিজ্ঞাপনই হলো একটি পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রাখার মতো অক্সিজেন। আর স্থানীয় পত্রিকা হিসেবে বিজ্ঞাপন পাওয়ার ক্ষেত্রে এ জায়গায় প্রতিযোগিতা ও থাকে বেশী।
সিলেট থেকে এই সময়ে ১২টির মত দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত অনিয়মিত বের হচ্ছে। প্রতিযোগিতার এই বাজারে স্বল্প বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজির বাজার পত্রিকা দীর্ঘ ২৩ বছর থেকে ধারাবাহিক প্রকাশনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি এটিই আমাদের বড় সফলতা বা প্রাপ্তি।
আমরা চটকদার কোনো সংবাদ প্রকাশ করে সাময়িক বাহবা নিতে চাই না কিংবা পত্রিকার কাটতির জন্য কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী মহলের বিরুদ্ধে এমন কোন সংবাদ প্রকাশ করতে চাইনা যার দ্বারা পরিবার সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমরা সব সময়েই ইতিবাচক সংবাদ দিয়ে সমাজ বদলাতে চাই, বদলাতে চাই মানুষের চিন্তা, চেতনা ও বিবেককে।
পরিশেষে দীর্ঘ পথচলার এই সফলতার পেছনের মূল কারিগর যিনি তিনি হলেন দৈনিক কাজির বাজার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আফছর উদ্দিন। তাঁর অর্থ-বুদ্ধি-পরামর্শ ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে আমাদের মতো একদল তরুণ সাংবাদিক দিন-রাত মাঠে-ময়দানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আজকের এই দিনে তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করি।
সোয়েব বাসিত
বার্তা সম্পাদক