কাজির বাজার ডেস্ক
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি নিয়ে গত শনিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ আয়োজন করে। তবে তাদের এক দফার সমাবেশ সহিংস রূপ ধারণ করে। সমাবেশের দিনই পুলিশসদস্যসহ বিএনপির এক কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এছাড়া পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় অনেকে আহত হন। এরপর পুলিশি বাধায় সমাবেশ পÐ হওয়ায় রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এদিনও বাসে-গাড়িতে আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন বিশ্ব গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা রোববার তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে বলেছে, ‘বাংলাদেশে সহিংসতা, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি হাজার হাজার মানুষের।’ সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে শনিবারের মহাসম্মেলন পÐ করে দিতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে গভীর বিভক্তি রয়েছে সে বিষয়টি এরমাধ্যমে ওঠে এসেছে বলে জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা। অপর মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সাধারণ নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, পুলিশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধী দলের সমর্থকদের সংঘর্ষ। জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচ ভেলে তাদের শিরোনামে লিখেছে, ‘সহিংস রূপ নিল বাংলাদেশের সরকার বিরোধী আন্দোলন।’ সংবাদমাদ্যমটি এক পুলিশ সদস্য নিহত হওয়া এবং আন্দোলনকারীরা একটি অবাধ ও স্বাধীন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে বলে জানিয়েছে। এছাড়া সহিংসতার ঘটনায় অনেক মানুষ আহত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেছে ডয়েচ ভেলে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা রোববার বাংলাদেশ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেতা (মির্জা ফখরুল ইসলাম) আলমগীর সরকার বিরোধী সমাবেশের পর আটক।’ সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এরমধ্যে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতাকে আটক করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সও সহিংসতার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। রয়টার্স বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবির মধ্যে বাংলাদেশের সরকার বিরোধী আন্দোলন সহিংস রূপ ধারণ করেছে। ব্রিটিশ এ বার্তাসংস্থা শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ চলার সময় এক পুলিশ সদস্য নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। অপরদিকে প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করার বিষয়টিকে শিরোনাম করে রোববার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর আগে শনিবার বিএনপির সমাবেশে সহিংস রূপ ধারণ এবং এই সহিংসতায় বিএনপির এক নেতা ও পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এনডিটিভি।
আরেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে ‘সহিংস সরকার বিরোধী আন্দোলনের পর বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা আটক’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বিএনপির মহাসমাবেশ এবং সেটি পÐ করে দিতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে।