চার মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখিয়ে তারিখ নির্ধারণ

28

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াবিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হওয়া চারটি মামলারই পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত আইনজীবীরা বলছেন, ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে মামলাগুলোর তারিখ ধার্য আছে। তাকে এসব মামলায় হাজির হতে হবে। আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, যেহেতু খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এবং আদালত সে বিষয়ে অবহিত, ফলে এসব মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে তাকে আদালতে নিতে হবে। কারণ, মামলাগুলোতে খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পরও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে। দুর্নীতি, যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, সহিংসতা, নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহ এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে এসব মামলা হয়। এর মধ্যে ১৯টি মামলা বিচারাধীন আছে। তিনটি মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হওয়া চারটি মামলার মধ্যে নাশকতা ও বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে কুমিল্লায় একটি, মানহানির মামলায় নড়াইলে একটি, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মানচিত্র ও জাতীয় পতাকাকে অবমাননার অভিযোগে এবং ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকার পৃথক দুটি আদালতে দুটি মামলা রয়েছে।
বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে কুমিল্লায় দায়ের করা মামলায় আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী হাজিরার দিন ধার্য রয়েছে। নড়াইলে মানহানির মামলায় পরবর্তী হাজিরার দিন আগামী ২৫ মে। ঢাকায় যে দুটি মামলা রয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মানচিত্র ও জাতীয় পতাকাকে অবমাননার অভিযোগের মামলাটিতে ১৪ মার্চ এবং খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন করায়, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আগামী ২৫ ফেব্র“য়ারি হাজিরার দিন রয়েছে।
নড়াইলের আইনজীবী আব্দুস সামলাম খান বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির যে মামলাটি আদালতে রয়েছে, সেটির পরোয়ানা জারি হয়ে আছে। এই মামলায় আগামী ২৫ মে তাকে আদালতে হাজির হতে হবে।’
এদিকে কুমিল্লার আইনজীবী কায়মুল হক রিংকু বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় নাশকতা, হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের মোট তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে নাশকতা ও হত্যা মামলায় তিনি হুকুমের আসামি। নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি উচ্চ আদালতে স্থগিত আছে। তবে হত্যা মামলাটিতে তাকে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হতে হবে।’
যেসব মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখিয়ে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে, সেসব মামলায় তাকে হাজির করতে হলে গ্রেফতার দেখাতেই হবে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘তিনি যদি হাজির হওয়ার তারিখ পর্যন্ত কারাগারে থাকেন, তাহলে তাকে আদালতে হাজির করার সময় গ্রেফতার দেখাতে হবে৷’
আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, ‘উনিতো (খালেদা জিয়া) কোনও অচেনা ব্যক্তি না। তিনি যে এখন কারাগারে রয়েছেন, সেটি আদালত অবহিত আছেন। কারাগারে থাকার সময় কোনও মামলার তারিখ পড়লে অবশ্যই শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে তাকে আদালতে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব মামলায় পরোয়ানা জারি আছে, সেই পরোয়ানার এখন আইনগত ভিত্তি নেই। কারণ, তিনি এখন কারাগারে। তাকে তো বাসায় গিয়ে পাওয়া যাবে না। সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে কাস্টডি ওয়ারেন্ট দিতে হবে—আসামি অমুক জায়গায় আছ, তাকে হাজির করা হোক। এই প্রক্রিয়াগুলো ফৌজদারি কার্যবিধিতে চলমান। উনার বিষয়ে সবাই জানেন, উনি কোথায় আছেন। এই কাস্টডি ওয়ারেন্ট আসার আগেই যদি উনি কারাগার থেকে বেরিয়ে যান, তাহলে তাকে নিজে নির্দিষ্ট তারিখে আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইতে হবে।’