ফিলিস্তিনের সমর্থনে লন্ডনে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ

22

কাজির বাজার ডেস্ক

ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সেন্ট্রাল লন্ডনে কয়েক হাজার মানুষ মিছিল করেছেন। এছাড়া ওই মিছিলে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইনের পক্ষ থেকে (পিএসসি) চলমান যুদ্ধে নির্বিচারে ইসরায়েলি হামলা বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহŸান জানিয়েছে। খবর বিবিসির। গত অক্টোবরেও সেন্ট্রাল লন্ডনে ফিলিস্তিনের পক্ষে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর গতকাল (শনিবার) চলমান এ মিছিলটি পশ্চিম লন্ডনে ইসরায়েলি দূতাবাসের কাছে গিয়ে হওয়া প্রথম প্রতিবাদ। বিক্ষোভে লন্ডন পুলিশের প্রায় ১৫০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাদের অংশ নেওয়া সবচেয়ে বড় মিছিলগুলির একটি। এক্ষেত্রে মিছিল চলাকালীন নিরাপত্তা কর্মীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, এছাড়াও আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেফতারের ক্ষেত্রে একেক জনের বিরুদ্ধে একেক অভিযোগ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে একজনকে নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন করার সন্দেহে, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় একজনকে এবং বাজে কিংবা হুমকিমূলক শব্দ ব্যবহার করায় আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির পক্ষে না থাকায় সরকার ও লেবার পার্টির তীব্র সমালোচনা করেছে পিএসসি। ক্যাম্পেইন গ্রæপটির সদস্য বেন জামাল বলেন, “ইসরায়েলের ওপর ‘বিশ্ব নেতাদের চাপ বাড়ছে’। এখানে নৈতিক বাধ্যবাধকতার ব্যাপারটি বেশ স্পষ্ট। বর্তমানে প্রয়োজন একটি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি। হামাস কর্তৃক গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর নির্বিচারে বিমান হামলা করতে থাকে ইসরায়েল। এই হামলার দুই দিন পর একটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঐ বিক্ষোভের পর সাম্প্রতিক সময়ে এটিই ছিল লন্ডনে ইসরায়েলি দূতাবাসের এলাকায় প্রথম বিক্ষোভ। এদিকে মিছিলকে উদ্দেশ্য করে যুক্তরাজ্যে ফিলিস্তিনের শীর্ষ দূত হুসাম জোমলট বলেন, আপনার রাগ ধরে রাখুন, আপনার ক্ষোভ ধরে রাখুন। ন্যায়বিচারের নিশ্চিতে এটি ব্যবহার করুন।
বিক্ষোভকারীদের পুলিশ মিছিলটি বেলা ৫ টা নাগাদ শেষ করতে বলে। আর ৬ টা নাগাদ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সকলকে চলে যেতে বলা হয়। এদিকে সিডনী ও ইস্তানবুলেও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে।
অপরদিকে বিক্ষোভটির তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি। তিনি এই মার্চটিকে ‘লন্ডনের মধ্য দিয়ে আরেকটি ইহুদি বিদ্বেষী কুচকাওয়াজ’ বলে অভিহিত করেছেন।
চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৮, ৬০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এক্ষেত্রে তেল আবিবের যুক্তি, স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নির্মূল করতে তারা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
দক্ষিণ গাজার রাফাহ ও মিশরীয় সীমান্তে স্থল বাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তেল আবিবের এমন পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করা হচ্ছে। কেননা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত বহু ফিলিস্তিনি ঐ অঞ্চলটিতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জিম্মিদের সহায়তা এবং একটি ‘টেকসই যুদ্ধবিরতি’ এর মাধ্যমে চলমান যুদ্ধ থামানোর আহŸান জানিয়েছেন। লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ের স্টারমের মিউনিক সিকিউরিটি কনফারেন্সে গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের যুদ্ধবিরতিতে যেতে হবে। আমরা সবাই যুদ্ধবিরতিতে যেতে চাই। এখন প্রশ্ন হলো কীভাবে আমরা ঐ অবস্থায় পৌঁছাতে পারি? লড়াই থামাতে হবে। রাফাহ-এর উপর যে কোনো হামলা অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। আমরা যেন ইসরায়েলের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন হতে না দিই।