সদর উপজেলার রাতগাঁও গ্রামে অন্ধ মনু নদীর উপর পদচারী সেতুর দাবিতে মানববন্ধন

9

মৌলভীবাজর সদর উপজেলার রাতগাঁও গ্রামের অন্ধ মনু নদীর উপর একটি পদচারি সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন পালিত হয়। ৯ অক্টোবর বেলা ২ টায় রাতগাঁও গ্রামবাসীর পক্ষে শতাধিক জনতার অংশগ্রহণে শমসেরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাতগাঁও গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি মোঃ খোরশেদ মিয়া। তরুণ সমাজকর্মী সোহেল আহমেদ সুবেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ হুমায়ূন কবির, মোঃ শিলু মিয়া, জাকার আহমদ, তাওন আহমেদ, দুদু মিয়া, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্র সাজেল আহমদ, আব্দুল আহাদ, মুহিদ মিয়া, ছনর মিয়া, রমুজ মিয়া, রুবেল মিয়া। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন গত ৫ ফেব্র“য়ারী রাতগাঁও গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক জনসাধারণের গণস্বাক্ষরে অন্ধ মনু নদীর উপর একটি পদচারি সেতু নির্মাণের দাবিতে ১০ নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছিলেন। সেই সময় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক রাজা গ্রামবাসীকে প্রকৌশলীসহ সরজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ ৮ মাসের বেশি সময়েও কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বক্তারা গ্রামবাসীদের দুঃখ কষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন রাতগাঁও গ্রামের মাঝপাড়ার উপর দিয়ে পূর্ব-পশ্চিম বরাবর অন্ধ মনু প্রবাহিত হয়ে রাতগাঁও গ্রামকে উত্তর-দক্ষিণে বিভক্ত করেছে। মাঝপাড়ায় প্রায় ৩০০ পরিবারে ২,৫০০-৩০০০ জন অধিবাসীর বসবাস। মাঝপাড়ার দক্ষিণ পারে রয়েছে শমসেরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধোবারহাট উচ্চ বিদ্যালয়, এলাকার একমাত্র ডিগ্রী কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও বাজার; অন্যদিকে উত্তর পারে রয়েছে মাঝপাড়ার জনগণের জীবিকার অন্যতম আধার বিস্তীর্ণ কৃষি জমি এবং প্রায় ৪০টি পরিবারের বসবাস। বর্ষকালে পানিতে টুইটুম্বুর আর বছরে প্রায় ১০ মাস পানিতে ভরাট থাকে অন্ধমনু নদী। ফলে বছরে ১০ মাসই এলাকার জনসাধারণের উত্তর-দক্ষিণে যাতায়াতে দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। শীতকালে দুই মাস এলাকার জনগণ অন্ধমনু নদীর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াতের জন্য পারাপারের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু বাকি ১০ মাস উত্তর পারের জনসাধারণ ও ছাত্রছাত্রীদের গোবিন্দপুর-মৌলভীবাজার রাস্তা ধরে অনেক পথ ঘোরে প্রায় ১ ঘন্টা পায়ে হেঁটে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ বা বাজার হাটে আসতে হয়। একইভাবে দক্ষিণ পারের জনগণকেও একই রাস্তা ধরে ১ ঘন্টা হেঁটে উত্তর পারে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি, কৃষি কাজের জন্য উত্তর পারে পৌঁছাতে হয়। আবার ফসল নিয়ে বিশেষত ধানের বোঝা নিয়ে এতটা পথ ঘোরে আসতে শ্রম, সময় ও আর্থিক খরচও অনেক বেড়ে যায়। অথচ স্বল্প ব্যয়ে অন্ধমনুর উপর পায়ে হেঁটে পারাপারের জন্য একটি পদচারী সেতু থাকলে মাত্র ৫/৭ মিনিটে উত্তর-দক্ষিণে যাতায়াত করা সম্ভব হতো। পথচারী সেতু হলে উভয় পারের জনসাধারণের জীবনে বিরাট প্রভাব পড়বে। ছাত্রছাত্রীরা যেমন পড়াশুনায় আর উৎসাহিত ও মনোযোগী হবে, তেমনি কৃষিকাজেও ব্যাপক উন্নতি হবে। সামগ্রিকভাবে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। বক্তারা অবিলম্বে অন্ধ মনু নদীর উপর একটি পদচারি সেতু নির্মাণের দাবি জানান। বিজ্ঞপ্তি