বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর থেকে
তাহিরপুরে হাওরে হাওরে বোর ধান পাকতে শুরু করেছে। এখন ফসল ঘরে তোলায় সময়। ঠিক এ সময়েই উপজেলার বিভিন্ন হাওরে কিছু কিছু এলাকার ধান ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট (গলাপচা) রোগের আক্রমন দেখা দিয়েছে। এ রোগের কারণে ক্ষেতের ধানের শীষ আস্তে আস্তে সাদা হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে, সাথে সাথে ধানে চিটা হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ২৩ টি ছোট বড় হাওরে ১৮ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ ফলণশীল ধান আবাদ হয়েছে বেশী। কৃষি অফিস আরো জানায় উপজেলার বেশ কয়েকটি হাওরের কিছু কিছু এলাকায় ব্রি ২৮ ধানে বøাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা পরার কারণে ২৮ জাতের ধানেই নেক বøাস্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ধানক্ষেত। তবে ছত্রাক নাশক স্প্রে করেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলে জনান উপজেলা কৃষি অফিস।
মাটিয়ান হাওরপার বড়দল গ্রামের কৃষক জুয়েল মিয়া, শনির হাওর পার উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক মুক্তার আহমেদ, জসিম মিয়া সহ বেশ কয়েক জন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে হাওরে ধান পাকার মুহুর্তে আছে। এ সময় ধানের শীষ সাদা হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি তাদের ভবাাচ্ছে। তারা জানান, শুধু ২৮ ধানেই নয় সুবর্ন ধানেও এ রোগ দেখা দিয়েছে।
মাটিয়ান হাওর পার সূর্যের গাও গ্রামের কৃষক কাশেম মিয়া বলেন, আমি মাটিয়ান হাওরে তাহিরপুর বড়দল সাবমার্সেবল সড়কের পাশে ৬০ শতক জমিতে ২৮ ধান রোপন করেছিলাম। গাছ দেখে মনে হয়েছেলি ফলন ভালো হবে। কিন্তু হঠাৎ করে ধান গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। ঔষধ দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। শনির হাওর পার দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের কৃষক কলিন আহমেদ বলেন, তার এলাকায় অনেক কৃষকের ২৮ ধান গাছ সাদা হয়ে মারা যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা কীটণাশক দিয়েছেন কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে পরামর্শের জন্য এলাকার অনেক কৃষক বাজারের কীটনাশক বিক্রেতাদের কাছেও পরামর্শ চাইছেন।
উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আল আমিন। তিনি জানান, তিনি শনির হাওরে (কিল এলকায়) ৩ কেদার জমি চোক (বর্গা) নিয়ে ২৮ ধান রোপন করেছিলেন। বর্তমানে তার ধান বøাস্টে আক্রান্ত। জমিতে ধান না হলে চোক ধান কি করে দিবেন এটাই ভাবছেন।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামন আসাদ বলেন, এলাকার অনেক কৃষক আমাদের কাছে পরামর্শের জন্য এসেছেন। আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছে। অনেকে উপকৃত হয়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান উদ দৌলা বলেন, ব্রি ২৮ ধান রোপণ না করার জন্য আমারা হাওর পারের কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কৃষক তা মানছেন না। আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠে রয়েছেন, কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।