স্টাফ রিপোর্টার :
আজ বেলা ১২টার মধ্যে শাবির ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগের ঘোষণা না দিলে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে যাবে। গতকাল রাতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সময় সীমা বেঁধে দিয়ে এই আল্টিমেন্টাল দেওয়া হয়।
এদিকে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ এনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা ২/৩শ’ শিক্ষার্থীকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে সোমবার গভীর রাতে জালালাবাদ থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন।
তিন দফা দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশের সংঘর্ষ হয়। অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করতে গিয়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করলে এই সংঘাত বাধে। এতে পুলিশ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের নির্দেশে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও গুলি ছুঁড়ে।
তবে এবার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ এনে মামলা করলো পুলিশ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত রবিবার ড. ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ২০০ থেকে ৩০০ ‘উশৃঙ্খল’ শিক্ষার্থী পুলিশের কর্তব্য-কাজে বাধা প্রদান করে, সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এছাড়া পুলিশকে লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীরা গুলি ছুঁড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। এতে মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখসহ ১০ জন পুলিশসহ আহত হন বলে উল্লেখ করা হয় মামলায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওইদিন পুলিশ ২১ টি সাউন্ড গ্রেনেড ও ৩২ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়ে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু খালেদ মামুন বলেন, সোমবার যে ঘটনাটি ঘটেছে তার প্রেক্ষিতে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় দুই থেকে তিনশ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি মামলায়। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।
তবে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ মিথ্যে দাবি কর শাবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব বলেন, পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করেছে। গুলি ছুঁড়েছে। আমাদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পুলিশের গুলি ছুঁড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়া মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, পুলিশ তখনো গুলি ছুঁড়েনি। পুলিশ ওইদিন ক্যাম্পাসে গুলি আনেইনি।
এদিকে মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে এখনও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন তারা। এই সময়ের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।