স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের বিয়ানীবাজার এলাকার একটি ডাকাতী মামলায় ৪ ডাকাতের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ২ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৪ মাস করে বিনাশ্রমে কারাদন্ড প্রদান করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এ রায় প্রদান করেন। বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আনোয়ারুল ইসলাম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে, জকিগঞ্জ থানার খালপাড় গ্রামের আব্দুল বারির পুত্র আকবর হোসেন (২৯), জগন্নাথপুর থানার ব্রাক্ষণগাঁও ইসলামপুর গ্রামের মৃত ওয়ারিশ উল্লাহর পুত্র নজরুল ইসলাম (৩৬), বিয়ানীবাজার থানার চারখাই এলাকার কামারগ্রামের লতিফ আলীর পুত্র এমাদ আহমদ (৩০) ও কানাইঘাট থানার জয়পুর গ্রামের মৃত ছৈয়দুর রহমান উরফে গুটাই মিয়ার পুত্র ছইফুল আলম উরফে আলম (৪০)। এর মধ্যে গতকাল রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী এমাদ আহমদ আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও অপর আসামীরা পলাতক ছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আনোয়ারুল ইসলাম।
অপর খালাসপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছেন, গোয়াইনঘাট থানার লুনি গ্রামের আব্দুর শুকুরের পুত্র ইসলাম উদ্দিন (৩৫) ও বিয়ানীবাজার থানার খশিরকন্দ হাতিটিলার সফর উদ্দিনের পুত্র মো: রাসেল উদ্দিন (২৫)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর রাত সোয়া ৩টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল বিয়ানীবাজার থানার পল্লীশাসন গ্রামের হাজী ইলিয়াছ আলীর পুত্র মো: এবাদুর রহমানের বাড়ির গ্রীল ও গেইটের তালা ভেঙ্গে বসতঘরে প্রবেশ করে। এ সময় এবাদুর রহমানকে ডাকাতরা মারধর করে হাত-পা বেঁধে ৩টি মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, ১ ভরি স্বর্ণালংকার ও টর্চলাইটসহ অর্ধ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে য়ায়। তখন এবাদুর রহমান শোর চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসতে দেখে ডাকাত দল ২ থেকে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে হাওরের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এবাদুর রহমান বাদি হয়ে ডাকাতদের বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-১১ (১৫-১১-২০১৫)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৬ মে বিয়ানীবাজার থানার এসআই মো: মোর্শেদ আলম ৬ ডাকাতকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং-৬৬) দাখিল করেন এবং ২০১৭ সালের ১৫ মে থেকে ওই ৬ আসামীকে অভিযুক্ত করে চার্জগঠন করে আদালত এ মামলার বিচারকার্য শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ৯ সাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ শেষে গতকাল বুধবার আদালত আসামী আকবর হোসেন, নজরুল ইসলাম, এমাদ আহমদ ও ছইফুল আলম উরফে আলমকে ৩৯৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে উল্লেখিত দন্ডদেশ প্রদান করেন এবং অপর আসামী ইসলাম উদ্দিন ও রাসেল উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের ২ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট এসএম পারভীন ও আসামীপক্ষে এডভোকেট মো: ইলিয়াছ ও এডভোকেট নাসির উদ্দিন সাদিক মামলটি পরিচালনা করেন।