কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ নামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন সেখানে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নের জন্য ছিল বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ঠিক ১১ দিন আগে, ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
ওই ইশতেহারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতির লক্ষ্যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে প্রথম সভা করেছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সরকারের সাড়ে ৩ বছরেরও বেশি সময়ে সে সব প্রতিশ্রুতির কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়?
সরকারের সাড়ে ৩ বছরেরও বেশি সময়ে সে সব প্রতিশ্রুতির কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়?
আওয়ামী লীগের ইশতেহারের ৩.২৮ অনুচ্ছেদে দেশের যুব সমাজ ও ক্রীড়ার বিষয়ে অতীত অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইশতেহারে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের গৌরব জাগানো অবস্থান আরও সুদৃঢ় করা, ফুটবল-হকিসহ অন্যান্য খেলাকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর জন্য প্রযোজনীয় সব কিছু করা, ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরণীদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে খেলাধুলা ও শরীর চর্চাকে শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।
ক্রিকেট, ফুটবল ও হকিসহ অন্যান্য খেলাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করার যে প্রতিশ্রুতি ছিল ইশতেহারে তার পরিপ্রেক্ষিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্ভাবনাময় ১৩টি খেলা বেছে নিয়ে ওই ডিসিপ্লিনগুলোর উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।
ইশতেহার বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ সভা করেছে। সেখানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতেহারের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে যে প্রতিশ্রুতিগুলো দিয়েছিল তার কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে তা পর্যালোচনা করা হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- ফুটবল, ক্রিকেট ও হকির পাশাপাশি সম্ভাবনাময় ১৩টি খেলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণ, প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরণীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে খেলাধুলা ও শরীর চর্চাকে শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়
সরকারের এই বিশেষ পরিকল্পনায় যে ১৩ খেলা নির্বাচন করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- আরচারি, কাবাডি, শুটিং, ভলিবল, ভারোত্তোলন, হ্যান্ডবল, টেবিল টেনিস, বাস্কেটবল, সাইক্লিং, সাঁতার, কারাতে, উশু ও তায়কোয়ানদো।
ইশতেহারে উল্লেখিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- এই খেলাগুলোর মানোন্নয়নের লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে খসড়া ডিপিপি প্রণয়ন শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ বলেন, ‘আমরা সম্ভাবনাময় ১৩টি খেলা বেছে নিয়ে ওই খেলাগুলোকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। খসড়া ডিপিপি শেষে এখন সেটা চূড়ান্তভাবে প্রণয়নের কাজ চলছে।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব বলেন, ‘এই পরিকল্পনাটি দীর্ঘমেয়াদি নয়। স্বল্প বা মধ্যমেয়াদি। চার-পাঁচ বছরের জন্য। এই খেলাগুলোয় তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে জাতীয় পর্যায়ের জন্য তৈরি করা হবে। এজন্য যেসব খেলার অবকাঠামো নেই তাদের অবকাঠামোও তৈরি করে দেওয়া হবে। এক কথায় এই ১৩ খেলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে।’
প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অগ্রগ্রতি পর্যালোচনার জন্য সর্বশেষ সভায় ইশতেহারের যেসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে সেগুলোও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।