সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকে বিএনপির সামাবেশ চলাকালে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ সংঘর্ষ শুরু হয়।
দীর্ঘদিন যাবত ছাতকে বিএনপির দুটি গ্রুপ কাজ করছে এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি, ছাতক-দোয়ারাবাজারের সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছাতক-দোয়ারাবাজার আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান। এ দুৎনেতার গ্রুপিং এর কারণে ছাতক উপজেলা, পৌরসভা ও দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির সম্মেলন করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলার ১১ উপজেলা ১ থানা ও ৪ পৌরসভার আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন তৎকালীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দিরাই-শাল্লার সবেক এমপি নাছির উদ্দিন চৌধুরী ও সদস্য সচিব ছাতক-দোয়ারাবাজারের সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। ছাতক-দোয়ারাবাজর ব্যতীত সকল উপজেলা ও পৌরসভায় সম্মেলনের মাধ্যেমে কোথাও কোথাও ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়। এমনকি এসব কমিটিরও মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এ দু নেতার গ্রুপিং এর কারণে ছাতক উপজেলা, পৌরসভা ও দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপি এখনও চলছে সেই আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে।
সোমবার দু’গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় সমাবেশ স্থল সহ আশপাশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতংক। শহরের আশা লোকজনের দিকবিদিক ছুটা ছুটি করেন। অনেকেই দোকানপাট ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। যানবাহনের ছুটাছুটি ও দোকানপাটের সাটার লাগানোর শব্দে গোটা শহরবাসী আতংকিত হয়ে পড়েন।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। তবে সংঘর্ষ বেশীক্ষণ স্থায়ী না হওয়ায় সমাবেশ চলছিল ধারাবাহিকভাবেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দু’টি বিবদমান গ্রুপের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাবেশ শুরু হলেও নেতাকর্মদের মধ্যে পৃথক সেন্টিমেন্ট কাজ করতে দেখা গেছে। আগত নেতাকর্মীরা স্ব স্ব নেতার নাম উল্লেখ করে মিছিলে শ্লোগান দিতেও দেখা গেছে। এ সময় দুটি খন্ড মিছিল সমাবেশ স্থলে আসার পথে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হঠাৎ মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মিছিলকারী এক কর্মীর হাতে থাকা দলীয় পতাকা বাঁধা বাঁশ দিয়ে প্রতিপক্ষকে আঘাত করার পরই দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিএনপির মিছিল ও সামবেশকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের কঠোর অবস্থান ছিল লক্ষ্যণীয়। পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে সংঘর্ষ বেশি দর গড়াতে পারেনি বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।