সা জু ক বী র

11

দুঃসহ স্মৃতি :

আমার হৃদয়ের একমুঠ মাংস
কাঁধে ঝোলানো ঝোলাটির ডিপফ্রিজে
নিত্য বহন করে চলি
সাত স্তর জমিনের ভারে ভারাক্রান্ত আমি…

এখানে আমার শীতের সোনাঝরা আলো ঝলমল সকাল ছিল- পদ্মবিলের জলে সূর্য দেখতাম, সূর্যকে কোলে নিতে গিয়ে বিলের বুকেই শুয়ে পড়তাম
মধ্যরাতের গা মাখা জোছনা ছিল–জোছনায়
বুকসাঁতার দেয়ার মজাটাই আলাদা ছিল
শিমুলতলায় পাতানো টঙ ছিল–প্রাণভরে শিমুল দেখতাম
শিমুলের রূপে পাগলপারা পাখিদের নৃত্য দেখতাম
শিমুল ধপাস করে আমার শরীরে পড়ত-‘ঠোট দুটো আমার শিমুলরাঙ্গা হয়ে উঠতো…

এখানে আমার নিবাস ছিল–বড়োসড়ো নিকানো উঠোন
শানবাঁধা দীঘি, দীঘিতে হরেকরঙা পদ্ম, ফুলে-ফলে নুয়ে পড়া গাছ গাছালি, অগুনতি পাখির সুরেলা গানের আনন্দ ধারায় আমি ভেসে যেতাম
সফেদ খাতা ছিল, ঝরণা কলম ছিল, কল্লোলিত মন ছিল, সংখ্যাহীন শব্দের কলকাকলি ছিল-‘আমি শব্দগুলো ধরে ধরে কলমের আগায় নিয়ে আসতাম সফেদ খাতা আমার কবিতায় ভরে যেত…

একসময় এক পৃথিবী স্বপ্ন নিয়তির সুনামিতে ভেসে যায়
দুঃসহ জ্বালা আমাকে অহোরাত্র খুবলে খুবলে খায়
খামচি দিয়ে স্মৃতিগুলো হৃদয়ের মাংসসহ ছিঁড়ে বাইরে নিয়ে আসি
সেই থেকে আমি হৃদয়কে ঝোলায় নিয়ে চলতে শিখি…

আসলে দুঃসহ স্মৃতি জীবনেরই অংশ
শরীর নয় মনের খাঁজকাটা ভাঁজে ভাঁজে তার যুতসই দখল
তাই হৃদয়ের অংশটুকু হৃদয়েই গেঁথে দিলাম আজ
সবাই চলে সুখভরতি অশ্বারোহী স্বপ্প নিয়ে
আমি না হয় চলবো বিষাদমাখা বিরহগীতি গেয়ে গেয়ে..