কাজিরবাজার ডেস্ক :
অনলাইন ক্যাসিনো পি-২৪ থেকে সেলিম প্রধান কি পরিমাণ টাকা অর্জন করেছেন, সেটার অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে র্যাব। এ টাকার একটি বড় অংশ লন্ডনে যেত প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে র্যাব। সেলিমের চার দেশের পাঁচ স্ত্রীর কাছে এ টাকার একটা অংশ থাকতে পারে বলে ধারণা করছে র্যাব। এ টাকারই একটা পরিমাণ মঙ্গলবার তার বনানীর আরেকটি বাসা থেকে জব্দ করা হয়েছে। এ সময় ক্যাসিনো সাইট অপারেটর আক্তারুজ্জামান নামের সেলিমের এক পার্টনারকেও আটক করা হয়। একই সঙ্গে রূপালী ব্যাংকের ১০৪ কোটি টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে তার আস্তানায়। ওই বাসা থেকে ২৩টি দেশের ৭৬ লাখ টাকা মূল্যের মুদ্রা, নগদ ৩০ লাখ টাকা, ৪৮টি এক্সক্লুসিভ ব্যান্ডের মদের বোতল, ১২টি পাসপোর্ট, ১২টি ব্যাংকের ৩২টি চেকবই, একটি বড় সার্ভার, ৪টি ল্যাপটপ এবং ২টি হরিণের চামড়া উদ্ধার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেলিম প্রধান ও আক্তারুজ্জামানকে বন্যপ্রাণী আইনে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এ আদেশ প্রদান করেন। তিনি জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আরও তিন মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া তার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে শ্রীলঙ্কার একটি ব্যাংকসহ মোট তিন ব্যাংকে বাংলাদেশের অনলাইন ক্যাসিনোর লেনদেন হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। অনলাইনে ক্যাসিনোর টাকা একটি গেটওয়েতে জমা হয়। এই গেটওয়ে থেকে তিন ব্যাংকে টাকা যায়। ব্যাংক তিনটি হলোÑ বিদেশী ব্যাংক কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন এবং দেশের বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক দি সিটি ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক।
র্যাব পরিচালক লে. কর্ণেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, অনলাইন গেটওয়ে দিয়ে এই তিন ব্যাংকে টাকা ঢুকত। লেনদেন করত সেলিম প্রধানের সহকারী আক্তারুজ্জামান। সেলিম প্রধানের সঙ্গে সমান অংশীদারিত্বে উত্তর কোরিয়ার নাগরিক মিস্টার তু অনলাইন ক্যাসিনোর ব্যবসা করত। এই অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হতো অথবা কোরিয়ান নাগরিক নিজে এসেও টাকা নিতেন। এখানে মানি লন্ডারিং অপরাধ হয়েছে।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, সেলিমের আরও একটি আস্তানায় নজরদারি চলছে। তার ক্যাসিনো পার্টনারদের ৬ জন সোমবার দেশ ত্যাগ করে বলে জানা গেছে।
র্যাবের অভিযানের সময় দেখা যায়, গুলশানের নিজ বাসায় একটি অনলাইন ক্যাসিনো থাকলেও বনানী ২নং রোডের ২৬নং বাসায় ছিল মূল আস্তানা। এখানে দেশী-বিদেশী অন্তত শতাধিক ব্যক্তির যাতায়াত ছিল। এদের ক’জনের নামের তালিকাও পেয়েছে র্যাব। এদিকে বুধবার সেলিমকে আদালতে হাজির করা হতে পারে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাব সূত্র জানিয়েছে, তার কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
আক্তারুজ্জামানকে আটকের পর র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) ও পরিচালক (মিডিয়া) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল সারোয়ার বিন কাশেম সাংবাদিকদের জানান, সেলিম বর্তমানে কারাগারে থাকা ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলেন। তিনি মামুনকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়িও উপহার দিয়েছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। এছাড়া সেলিম বিভিন্ন সময় লন্ডনে টাকা পাঠিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে আমরা তাকে গ্রেফতার করি। লন্ডনে তিনি কাকে টাকা পাঠাতেন? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে র্যাবের অধিনায়ক বলেন, লন্ডনে কোথায় পাঠাতেন, সমীক্ষা করে জানাব।
সোমবার রাত ও মঙ্গলবার দুপুরের দুই অভিযান সম্পর্কে সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, র্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল আছে। এতে দেখতে পাই, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অনলাইনে ক্যাসিনো গেমিংয়ে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। সোমবার আমরা জানতে পারি, এটার প্রধান সমন্বয়ক দলনেতা, অধিনায়ক সেলিম প্রধান বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছিলেন। আমরা খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হই এবং প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বাসা ও অফিসে অবস্থান নেই। সারারাত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র পেয়েছি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধানের জন্ম ১৯৭৩ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। তার বাবার নাম হান্নান প্রধান। নি¤œমধ্যবিত্ত পরিবারের সেলিম মাত্র পনেরো বছর বয়সেই ১৯৮৮ সালে ভাইয়ের মাধ্যমে জাপানে চলে যান জীবিকার সন্ধানে। সেখানে তার চল্লিশোর্ধ এক জাপানী নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর আর্থিক সচ্ছলতা আসায় শুরু করেন গাড়ির ব্যবসা। এ সময় তার বড় ভাইও জাপানীজদের সঙ্গে গাড়ির ব্যবসায় নিয়োজিত হন। পরবর্তীতে জাপানীদের সঙ্গে থাইল্যান্ডে গিয়ে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে ব্যবসা করেন। সেখান থেকেই সেলিম সন্ধান পায় অন্ধকার জগতে। জুয়া, হাউজি, ক্যাসিনো, স্পা, কারাকোর মতো ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। এ সময় সেলিম প্রধান ব্যাঙ্ককের পাতায়ায় বিলাসবহুল হোটেল, ডিসকো বারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। থাইল্যান্ডের পাতায়াতেও গড়ে তোলে ক্যাসিনো ব্যবসা। সেখানেই তিনি গড়ে তোলেন ‘প্রধান গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। থাইল্যান্ড ও জাপানে রয়েছে তার বিপুল অর্থ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পাতায়া শহরে রয়েছে তার হোটেল ও ডিস্কোবার। তার ডিস্কোবারে নিয়মিত নাচ-গান করেন রাশিয়ান তরুণীরা। এটি চালু করেন ২০০৪ সালের নবেম্বরে। ওই সময়ে পাতায়া শহরে চালু করেন কয়েক ম্যাসাজ পার্লার। পার্লারগুলোতে ফিলিপিন্সের তরুণীরা কাজ করেন। তারপর একে একে কয়েকটি পার্লার খুলেন তিনি। তিনি ঢাকা ওয়ান্ডার্রার্স ক্লাবের সহ-সভাপতি। এছাড়া এর আগে গ্রেফতার হওয়া বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্যাশিয়ারও। তার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে দেখা যায়, গুলশান-২ এর ৯৯ নম্বর রোডের ১১/এ নম্বরে রয়েছে ‘পি২৪’ এর অফিস। কর্পোরেট অফিসের ঠিকানা দেয়া হয়েছে, ডি-১ মমতাজ ভিশন, গুলশান-২ এর ৯৯ নম্বর রোডে ১১/এ। বিদেশের অফিসের ঠিকানা হচ্ছে, ১৬৫/৯৬ মো ১০, সুরাসাক, শ্রী রাখা, চনবুন, থাইল্যান্ড, ২০১১০। এই গ্রুপের অধীনে পি২৪ গেইমিং নামের একটি কোম্পানি আছে, যাদের ওয়েবসাইটেই ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার তথ্য রয়েছে। প্রধান গ্রুপের কোম্পানি জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং এ্যান্ড পেপার্সের নাম রয়েছে ঢাকা চেম্বারের সদস্যদের তালিকায়। সেলিম প্রধানের অফিসের ঠিকানা দেয়া হয়েছে গুলশানে। সেখানেই পি২৪ গেইমিংয়ের অফিস।
সেলিম প্রধানের নারী প্রীতি নিয়েও বন্ধুদের কাছে বিশেষ পরিচিতি। দুই বাংলাদেশী স্ত্রী ছাড়াও জাপানী, আমেরিকান ও রাশিয়ান মিলে মোট পাঁচ স্ত্রী রয়েছে তার। বিদেশী স্ত্রীদের তিনি ব্যবহার করতেন সংশ্লিষ্ট দেশে বিনিয়োগ ও বসবাসের সুযোগ সৃষ্টির জন্য। বাংলাদেশী স্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন একজন কাস্টমস কর্মকর্তাও।
র্যাব জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের আদলে ঢাকার গুলশানে গড়ে তোলেন স্পা সেন্টার। মি. দু নামের এক কোরীয় ব্যক্তি তাকে অনলাইন ক্যাসিনো খোলার উপদেশ দেন। এরই ফলশ্রুতিতে তিনি ২০১৮ সালের পি-২৪ এবং টি-২১ হিসেবে দুইটি গেমিং সাইট খুলেন। সেখান থেকে তিনি অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনা করতেন। তার কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, ওই কোরীয় ও সেলিমের ৫০-৫০ অনুপাতে লাভ ভাগের চুক্তি হয়েছিল। গুলশানের ৩৩ নম্বর রোডের ১১ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত এই স্পা সেন্টারে যাতায়াত করতেন প্রভাবশালী অনেকে। প্রভাবশালী কেউ স্পা সেন্টারে পা রাখলে ওই সময়ে যথেষ্ঠ সংরক্ষিত রাখা হতো সেন্টারটি। ‘ক্লোজ’ বলেও অনেক ক্লায়েন্টকে ফিরিয়ে দেয়া হতো।
সূত্র বলছে, সেলিম প্রধান ঋণ খেলাপী। থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের অনলাইনের মাধ্যমে ক্যাসিনো ব্যবসা চালাতেন সেলিম। অনলাইনে কয়েন বিক্রি করে এই ক্যাসিনো চালানো হতো। এসব করে কামিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। সেলিম প্রধান রূপালী ব্যাংক থেকে ১০০ কোটি টাকা লোন নিয়েছেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্পা ও বিউটি পার্লার যেখানে ভিআইপিদের আসা-যাওয়া রয়েছে, সেগুলোতে নারী সরবরাহের কাজ করতেন সেলিম। সেই মেয়েরা ভিআইপিদের বিনোদন দেয়ার কাজ করতেন। সিলেট থেকে অবৈধভাবে পাথর নিষ্কাশনের কাজ করতেন তিনি। সেলিম প্রধানের উত্থান ঘটে ওয়ান ইলেভেনের সময়। ওয়ান ইলেভেন সরকারের অনুমতি নিয়েই তিনি বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারী খাতে সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস তৈরি করেন। তিনি জাপান থেকে অর্থায়ন করে প্রিন্টিং প্রেস করেছেন বলে তার আয়কর বিবরণীতে উল্লেখ আছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসলে সরকারের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এটা কাজে লাগিয়ে তিনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। অভিযোগ আছে, ঋণের অধিকাংশ অর্থই তিনি ব্যাঙ্ককে পাচার করেন এবং সেখানে তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন শুরু করেন। এত টাকা থাকার পরও সেলিমের পরিচিতি রয়েছে ব্যাংক ঋণ খেলাপী হিসেবে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তার যোগসাজশ থাকার কারণে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। ব্যাঙ্ককে অবস্থান করলেও গত দুই বছর ধরে সেলিম প্রধান অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসা শুরু করেছিলেন। বিশ্বব্যাপী যে অনলাইন ক্যাসিনো সেন্টার বাংলাদেশ শাখা চালু করেছিলেন তিনি। অনলাইন ক্যাসিনো সিন্ডিকেট বাংলাদেশের প্রধান হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন তিনি। শুধু অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনাই নয়, সেলিম প্রধান রাজশাহীসহ সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় গবাদিপশুর সব খাটাল ও মাদক সিন্ডিকেটের হোতা। সীমান্তে জালটাকার মূল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণও তার হাতে। প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে তিনি খাটাল, মাদক ও জালটাকার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। সেখান থেকে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা নেন। দুই বছরে তিনি সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন।
এদিকে সেলিমকে গ্রেফতারের অনলাইন ক্যাসিনো সম্পর্কে জনমনে বিশেষ কৌতূহল দেখা দিয়েছে। গতকাল অনলাইন ক্যাসিনো ছিল টক অব দ্য ক্যাপিটাল। অনলাইন ক্যাসিনো সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাবের গণমাধ্যম পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, এটাকে বলা হয় ভার্চুয়াল ক্যাসিনো। আপনারা এতদিন মাঠে ক্যাসিনো বোর্ড দেখেছেন। এগুলো অনলাইনে খেলা হচ্ছে। অনলাইনে টাকা দিয়ে এগুলো খেলতে হয়। ধরেন, একটি মোবাইলে আপনি একটা সফটওয়্যার ইনস্টল করলেন (পি-২৪)। এগুলো খেলতে হলে একাউন্ট খুলতে হবে। এটি ভিসা, মাস্টার কার্ড, বিকাশ, নগদের হতে পারে। এটাতে অনায়াসেই একদেশের টাকা অন্যদেশে পাঠানো সম্ভব। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রেখে এটিতে একাউন্ট খুলতে হয়। কেউ টাকা জিতলে নির্দিষ্ট একাউন্টে টাকা আসবে। হারলে টাকাগুলো একটি গেটওয়ের মাধ্যমে তিন ব্যাংকের একাউন্টে যেত। সপ্তাহে একদিন সব টাকাগুলো এক ব্যাংকে দেয়া হতো। আমরা তার সহযোগী আক্তারুজ্জামানকেও গ্রেফতার করেছি। আক্তারুজ্জামান তার গেমিং সাইটটি চালাত এবং টাকাগুলো সংগ্রহ করে অন্য ব্যাংকে জমা করত। এরপর কোরীয় নাগরিক এসে এই টাকাগুলো নিয়ে যেত। এটি সরাসরি মানি লন্ডারিং আইনের লঙ্ঘন। তাই তাকে ৪টি অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমত মানি লন্ডারিং, মাদকদ্রব্য, ফরেন কারেন্সি এ্যাক্ট এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের লঙ্ঘন। এর বাইরে প্রতারণারও কিছু অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, সেলিম প্রধানের প্রতিষ্ঠিত এই জুয়ার আসরের নাম পি-২৪। অনলাইনে দুনিয়াব্যাপী ক্যাসিনো ছড়িয়ে দেয়াই ছিল তার টার্গেট। এ জন্য অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিলেন। সোমবার বিমানবন্দরে আটক হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাজাসাবাদে এ ধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র্যাব। এদিকে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বনানীর আরেকটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তার টু আইসি হিসেবে খ্যাত আক্তারুজ্জমানকে আটক করেছে র্যাব।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে গুলশান-২ এর ১১/এ রোডে সেলিম প্রধানের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশী-বিদেশী মদ, নগদ টাকা ও বিদেশী মুদ্রা জব্দ করেছে র্যাব। তার আগে সোমবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২২ নম্বর ফ্লাইট ছাড়ার আগমুহূর্তে সেলিম প্রধানকে আটক করা হয়। র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বলেন, সেলিম অনলাইন ক্যাসিনো জুয়ার সঙ্গে জড়িত। তিনি ক্যাসিনোর অর্জিত আয় বিদেশে পাচার করে আসছিলেন। এ সব অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, অনলাইনে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে আটক সেলিম প্রধান বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সঙ্গে প্রায়ই তাকে হাওয়া ভবনে যেতে দেখা গেছে।