দোয়ারাবাজারে বাদাম সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণী

15

শাহ্ মাশুক নাঈম, দোয়ারাবাজার

এক সময় যে জমিন অনাবাদি পড়ে থাকত। সে দিকে কারো নজর ছিল না। এখন সে বালুচরে ফলছে বিভিন্ন জাতের বাদাম। অল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে বাদাম চাষ। চলতি মৌসুমে বাদামের বাম্পার ফলন হওয়ায় বাদাম সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাঠাচ্ছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা।
সরেজমিন সুনামগঞ্জে দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের বালিচরায় বিস্তীর্ণ এলাকা ঘরে দেখা যায়। প্রায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে হয়েছে বিভিন্ন জাতের বাদাম চাষ। মাঠজুড়ে সবুজ পাতার সমারোহে প্রখর রোদের মধ্যেই উৎসব মুখর পরিবেশে শিশু, নারী, পুরুষ, কৃষাণ-কৃষাণী সবাই মিলে ক্ষেতে থেকে বাদাম তুলছেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রোদের মধ্যেই কেউ ছাতা টানিয়ে বাদাম গাছ তুলছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাদাম চাষের কারণে এই এলাকায় ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। ধান চাষের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় অনেকেই বাদাম চাষে ঝুঁকছেন। বাদাম চাষের কারণে বালুচরার জমির দামও কয়েক গুণ বেড়েছে। প্রতি একর জমিতে বাদাম হয় ১৫-২০ মন। ১ মন বাদামের দাম ৬ হাজার টাকা। চলতি মৌসুমে বাদামের দাম বেড়েছে মনপ্রতি এক হাজার টাকা। বাদাম চাষি খোকন মিয়া কাজির বাজারকে বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকলে থাকার কারণে বাদামের ফলন ভাল হয়েছে। আর অন্য ফসলের চাইতে বাদাম চাষ করতে খরচও কম লাগে। অল্প কিছু কীটনাশক ও অল্প পরিসরে চাষ দিলেই বাদাম চাষ করা সম্ভব। বাদাম চাষ করতে বাড়তি সেঁচ ও নিরানি কোন প্রয়োজন হয় না। ফলে কম খরচে বেশি মুনাফা অর্জনের জন্য কৃষকরা বাদাম চাষে আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছে। বাদাম চাষি আয়েশা খাতুন কাজির বাজারকে জানান, বাদাম চাষে খুব একটা কষ্ট করতে হয় না আবার ফসলও ভালো হয়। বাদাম ঘরে তোলা পর্যন্ত ২ থেকে ৩ বার জমিতে স্প্রে করতে হয়। প্রতি স্প্রেতে বিঘায় খরচ হয় ২০০ টাকা। প্রতি বিঘায় দুইবার সার দিতে হয়। আর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। পাশাপাশি বাজারেও বাদামের ভালো দাম পাওয়ার আশা করছি।
দোয়ারাবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ মহসিন কাজির বাজারকে বলেন, বাদাম চাষে জমি এখন সম্পদে পরিণত হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বাদাম চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। এ বছর বাদাম উপজেলায় ২৩০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে ৯০ জনকে প্রনোদনা হিসেবে বীজ দেওয়া হয়েছে। এবছর ফলন ও হয়েছে ভালো। দাম ভালো হওয়ায় চাষিরা অনেক খুশি।