জীবন সংগ্রামী কমলি রবিদাসকে মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের অনুদান প্রদান

10

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর পাস করা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সন্তোষ রবিদাস অঞ্জনের মা জীবন সংগ্রামী কমলি রবিদাসকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নগদ এক লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
গতকাল রবিবার (২১ আগষ্ট) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয় সন্তোষ রবিদাস অঞ্জনকে। তাঁর হাতে নগদ এই টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মীর নাহিদ আহসান।
মৌলভীবাজারের শমসেরনগরে ফাঁড়ি কানিহাটি চা বাগানের এক শ্রমিক পরিবারে জন্ম সন্তোষ রবিদাস অঞ্জন। জন্মের মাস ছয়েকের মাথায় বাবাকে হারিয়েছিলেন। মা কমলি রবিদাস চা বাগানের শ্রমিক। তখন মজুরি পেতেন দৈনিক ১৮ টাকা। সেই সময় ছেলেকে অন্যের বাসায় রেখে তিনি চলে যেতেন চা বাগানে। শমশেরনগর ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন সন্তোষ। ২০১৩ সালে ভর্তি হন ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজে। সন্তোষের মায়ের মজুরি ছিল তখন ১০২ টাকা। তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছেলের ভর্তির টাকা, ইউনিফর্ম আর বই-খাতা কিনে দিয়েছিলেন। ২০১৪ ডিসেম্বরে ছিল সন্তোষের এইচএসসির নিবন্ধন। তাঁর মা কমলি রবি দাস তখন ৫০ টাকার একটি নোট দিয়ে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলেছিলেন, ‘দেহি, কেউ ধার দেয়নি রে, বাপ।’
সন্তোষ, সুখের আশায় চা শ্রমিক মা কলেজের এক শিক্ষকের কাছ থেকে ধার নিয়ে সেবার নিবন্ধন ফি দেওয়া হয়। এইচএসসির পর ভর্তি পরীক্ষার কোচিং। তাঁর মা কমলি রবিদাস তখন আবার ঋণ নিলেন ব্যাংক থেকে। লোনের কিস্তি পরিশোধে বাসা থেকে অনেক দূরে গিয়ে বালু শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এভাবে খেয়ে না খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে পড়ার সুযোগ পেলেন সন্তোষ। মা-ছেলের এই সংগ্রামের গল্প নিয়ে বিভিন্ন দৈনিক কালের কন্ঠতে সংবাদ প্রকাশিত হলে রীতিমতো ভাইরাল হয় এটি।