শাবিতে শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যাকান্ড ॥ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি, অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা, এক ছাত্রীসহ আটক ৪

13
শাবি ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত শিক্ষার্থী বুলবুল আহমদ এর জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের মাঠ সংলগ্ন রাস্তায়। ছবি মামুন হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বুলবুল আহমদ হত্যার ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আক্তারুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে এই তদন্ত কমিটি করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যারা হলেন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন, শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান খান, লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় অজ্ঞাত কয়েকজন দুষ্কৃতীদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ এক ছাত্রীসহ ৪ জনকে আটক করেছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এসএমপি পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের এ তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, শাবি শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সন্দেহভাজন বিহিরাগত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে, তারা বিভিন্ন সময় অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এছাড়া উর্মি নামে শাবির এক ছাত্রীকেও আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে বুলবুলের হত্যাকারীদের গ্রেফতারসহ ৪ দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এই কর্মসূচিতে কয়েকজন শিক্ষকও অংশ নেন। লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে ওই মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে (২২) ছুরিকাঘাতের সময় তার সঙ্গে টিলায় অবস্থান করা বান্ধবী মার্জিয়া ঊর্মি হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঊর্মিকে খুঁজে বের করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে নিয়ে ক্রাইম সিনে (ঘটনাস্থলে) যায় পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
তিনি বলেন, সে হাসপাতাল থেকে চলে আসার পর আমরা অনুসন্ধানে নামি। পরে জানতে পারি সে ভার্সিটির হলেই অবস্থান করছে। এখন তাকে আমরা ক্রাইম সিনে আছি।
সোমবার ২৫ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে গাজিকালুর টিলার পাশে ছুরিকাঘাতে খুন হন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থীকে যখন ছুরিকাঘাত করা হয় তখন টিলায় তার সঙ্গে ছিলেন বান্ধবী ঊর্মি। ছুরিকাঘাতে আহত বুলবুলকে ওসমানী হাসপাতালে আনা হলে ঊর্মির সেখানে যান। কিছুক্ষণ পর বুলবুল মারা যান। এ ঘটনায় বার বার অজ্ঞান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সোমবার রাতেই নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঊর্মিকে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে হুট করে হাসপাতাল থেকে ‘উধাও’ হয়ে যান তিনি। পরে পুলিশ শাবির হলে তার সন্ধান পায়। এদিকে, শাবি শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জালালাবাদ থানায় একটি মামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেনের করা মামলায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ সন্দেহভাজন ৩ বহিরাগতকে আটক করেছে।