কাজিরবাজার ডেস্ক :
মোবাইল ফোন ব্যবহারে শীর্ষে রয়েছে সিলেট ও ঢাকা। এই দুই বিভাগের ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারে আছে সেলুলাল ফোন। আর স্মার্ট ফোন আছে সর্বোচ্চ ৬৯ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি)’ ব্যবহার জরিপে উঠে এসেছে এসব তথ্য। বুধবার জরিপটির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস অডিটরিয়ামে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্ভে পরিচালনার জন্য এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্চে ৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত এটি চলবে। প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ৩০ হাজার ৮১৬ খানা (পরিবার) থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। গত ২৯ মে থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সেখানে আরও বলা হয়, বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এমন পরিবার রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ফিক্সড টেলিফোন রয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে। রেডিও রয়েছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে। এছাড়া টেলিভিশন রয়েছে ৬২ শতাংশ, কম্পিউটার আছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ইন্টারনেট আছে ৩৮ দশমিক ১ শতাংশ পরিবারে। পরিবারের ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বাধা উঠে এসেছে। যেমন- প্রয়োজন নেই মনে করে ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। এছাড়া বাড়ির বাইরে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৭ দশমিক ১ শতাংশ পরিবারের মানুষ। ইন্টারনেট সংযোগ ইক্যুপমেন্টের দাম বেশি বলে জানিয়েছে ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও বিশ্বস্ততা নষ্ট হতে পারে বলে মনে করে ২ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবার। এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ সহজলভ্য নয় বলেছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ, ইন্টারনেট সহজলভ্য হলেও আগ্রহ নেই ৭ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারের। এছাড়া সাংস্কৃতি নষ্ট হবে বলে মনে করে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ পরিবার এবং বিদ্যুৎ নেই শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ পরিবারের।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড.শাহনাজ আরেফিন এবং একই সংস্থার অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহমেদ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিবিএস’র ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড লেবার উইংয়ের পরিচালক কবীর উদ্দিন। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক সৈয়দা মারুফা শাকি।
প্রতিবেদনে তুলনামূলক একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, ২০১৩ সালে ৮৭ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারে সেলুলার মোবাইল ফোন ছিল, সেটি বেড়ে ২০২২ সালে হয়েছে ৯৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ল্যান্ড ফোন ছিল ৩ দশমিক ১ শতাংশ পরিবারে, সেটি কমে হয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। কম্পিউটার ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারে। সেটি বেড়ে এখন হয়েছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। রেডিও ছিল ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ, এখন সেটি কমে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে। টেলিভিশন ছিল আগে ৪৬ শতাংশ পরিবারে, এখন বেড়ে হয়েছে ৬২ শতাংশ। ২০১৩ সালে ইন্টারনেট ব্যবহার করতো ৪ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার, ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ দশমিক ১ শতাংশে। মাত্র একদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন এমন মানুষ ২০১৩ সালে ছিল ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২২ সালে সেটি বেড়ে হয়েছে ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ।
বিভাগ ভিত্তিক দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৬৮ দশমিক ১ শতাংশ পরিবারের টেলিভিশন রয়েছে। এছাড়া সবচেয়ে কম টেলিভিশন আছে ময়মনসিংহ বিভাগে, ৫৯ দশমিক ৩ শতাংশ পরিবারে। রেডিও আছে সর্বোচ্চ বরিশাল বিভাগে ২৯ শতাংশ পরিবারে, সর্বনিম্ন রংপুর বিভাগে ৪ শতাংশ পরিবারে। টেলিফোন আছে সর্বোচ্চ ঢাকা বিভাগে ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ, সর্বনিম্ন রংপুর বিভাগে ৯৪ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে। মোবাইল সেলুলাল ফোন আছে সবচেয়ে বেশি ঢাকা ও সিলেটে ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারে। স্মার্ট ফোন আছে সর্বোচ্চ ৬৯ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে, সর্বনিম্ন ৩২ শতাংশ পরিবারে। ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়স পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৯৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ সেলুলার মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। স্মার্ট ফোন রাখেন একই বয়সের ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।