বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন সিলেটে ভয়াবহ বন্যায় সরকারের পক্ষ থেকে তেমন সাহায্য সহযোগিতা নেই, যা ঘোষণা করা হয়েছে তা খুবই অপ্রতুল। সিলেটের এই বিপদে সরকারের ভূমিকা তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। বেসরকারি, প্রবাসী ও ব্যক্তি সাহায্য সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সিলেটে বন্যায় প্রথম দিন থেকে নেতাকর্মীরা সাহায্য সহযোগিতা করে আসছে। প্রতিদিন বিএনপির নেতাকর্মীরা সিলেট নগরী ও জেলার প্রত্যন্ত জায়গায় খাদ্য সামগ্রী নিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে। বিএনপির এই কার্যক্রম তাদের চোখে পড়ে না কারণ তারা জনগণ থেকে জনবিচ্ছিন্ন। এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় চরম ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিকাল সাড়ে তিনটায় সিলেট নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডে খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে এই কথাগুলো বলেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকী’র সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী’র পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপির জাতীয় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সদস্য সচিব ইয়াছিন আলী, বিএনপি চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা ডঃ এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডাঃ শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এড.হাবিবুর রহমান হাবিব, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, এড.রোকসানা বেগম শাহনাজ, সৈয়দ মইন উদ্দিন সোহেল, সদস্য মাহবুব চৌধুরী, ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক সাহাবুদ্দিন আহমদ, ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক খসরুজ্জামান, ১২নং ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক সাব্বির আহমদ বাচ্চু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজ, সিলেট জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মকসুদ আহমদ সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এ্যাষ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আহসান, মহানগর শ্রমিকদলের আহবায়ক আবদুল আহাদ প্রমুখ।
জৈন্তাপুর থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : বন্যায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। লক্ষ লক্ষ মানুষ ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। কেউ একবেলা খেয়ে আছেন কেউ খাবার পাচ্ছেন না। বিনা চিকিৎসায় আছে মানুষ। জনগণ বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে। গত দুই দিনে এই জৈন্তাপুরে মা ছেলে সহ ৩জনের লাশ পাওয়া গেছে। এতে সরকারের কোন যায় আসে না। সরকার দেশের মানুষকে বিপদে রেখে পদ্মা সেতু উদ্বোধনে শতকোটি টাকা খরচ করে উৎসবে মেতে উঠেছে। আপনারা অন্তরের মধ্যে আছেন বলেই আমরা আপনাদের দুর্যোগে পাশে আছি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুর ১টায় সিলেটের জৈন্তাপুরে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের খাজার মোকাম উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন।
তিনি আরো বলেন, বিপর্যস্ত মানুষ কারো কাছে হাত পাতে না। তাদের কাছে ত্রাণ নিয়ে যেতে হয়। তাদের খোঁজ খবর নিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী এসব না করে জনগণের টাকা খরচ করে হেলিকপ্টারে করে ঘুরে গেছেন। সার্কিট হাউজে গিয়ে লোক দেখানো ৭ জন মানুষকে ৭ টি প্যাকেট দিয়ে গেছেন। ৩০ লাখ বানভাসি মানুষের জন্য মাত্র ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এ টাকায় কি হবে। রাতের ভোটের সরকার জনগণকে প্রয়োজন মনে করে না। তারা বিনা ভোটে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। সরকার দুর্নীতি করার জন্য বড় বড় প্রজেক্ট করে কিন্তু গরিবের জন্য কি করছে। মাওয়া ঘাটে ৯০টি প্রশ্রাবখানা তৈরি করতে ৯ কোটি টাকা খরচ করেছে এ টাকা বন্যার্ত মানুষকে দিলে অনেক উপকার হতো। অনেক আগে আপনাদের কাছে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু ট্রেন ও বিমান বন্ধ থাকায় আসতে পারিনি। শিয়ালের কাছে আর মুরগি দেয়া যাবেনা উল্লেখ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, আপনারা আওয়াজ তুলতে হবে আমাদের ভোটের অধিকার ফেরত চাই। আমরা হাসিনার অধিনে নির্বাচন চাইনা। নিরপেক্ষ সরকার চাই।
২০০৪ সালের বন্যায় বেগম খালেদা জিয়া মানুষের দ্বারে দ্বাওে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন- কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে ঘুরে গেছেন বলে মন্তব্য করেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল বলেই জনগণের কাছে এসেছে, আওয়ামী লীগ জনগণের তোয়াক্কা করে না বলে এই দুর্যোগেও তারা জনগণের পাশে নেই।
ত্রাণ বিতরণে যাওয়ার আগে সিলেট হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিকেলে তারা নগরের বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করবেন বলে জানা গেছে।
ত্রাণ বিতরণ কালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন, সিলেট জেল পরিষদের সদস্য মুহিবুল হক মুহিব, জেলা পরিষদ সদস্য রফিকুল ইসলাম শাহপরান, জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ,সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাফিজ, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল আহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নিজপাট ইউপি চোরম্যান ইন্তাজ আলী, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ও দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহর, উপজেলা বিএপির সাবেক আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম জাকারিয়া, সাবেক মেম্বার আব্দুল হক সহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণের জন্য মানুষ হাহাকার করছে উল্লেখ করে সরকার উৎখাতের জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান তিনি। বিজ্ঞপ্তি