মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজার পৌরসভাসহ চার উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। এদিকে বন্যাকবলিত এলাকায় ও আশ্রয়কেন্দ্রে দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, চুলকানিসহ বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগ। আর বন্যার পানিতে জীবজন্তু গাছপালার লতাপাতা পচে যাওয়ায় চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এদিকে গ্রামের অধিকাংশ টিউবয়েল ও পুকুর ডুবে যাওয়ায় অনেকে এই পানিতে সারছে প্রয়োজনীয় কাজ।
তবে ডায়রিয়া ও চুলকানিসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব থাকলেও এ সব রোগ মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানালেন মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আবু জাহের।
বন্যার পানির কারণে বাংলাদেশ-ভারত সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে বাংলাদেশ-ভারত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
মৌলভীবাজার পৌরসভা, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলায় বাড়ি ঘর ও রাস্তাঘাটের অধিকাংশ এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। পানি নামার সাথে সাথে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। জীবজন্তু গাছপালার লতাপাতা পচে যাওয়ায় চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মৌলভীবাজার-কুলাউড়ায় পানির স্রোতে চাতলাপুর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে যাওয়ার রাস্তার একটি বড় কালভার্ট দেবে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
শরীফপুরের আমতলা থেকে চাতলাপুর চেকপোস্ট পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক ৩ ফুট পানিতে নিমজ্জিত তাকার কারণে দুটি স্থানে সড়ক ভেঙে গেছে। মনু নদের চাতলা সেতু একটি কালভার্টের একাংশ দেবে গিয়ে ১৩ জুন দুপুর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে।
অন্যদিকে উজানের ঢল আর বন্যার পানি ঢুকে জেলার তিনটি হাওড়ে পানি বাড়ছে। আর কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে এখনও ২০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামের পানি ধীরগতিতে নামছে। বেশিরভাগ মানুষ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। কিছু এলাকায় ফসলের মাঠসহ বাড়ি-ঘরের আশপাশে পানি রয়েছে। রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলায় হাওড় অঞ্চলে কিছু গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বন্যায় প্লাবনের পানিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মৎস্য খামারিদের ১৫৫০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে এতে ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। গত মঙ্গলবার কমলগঞ্জের ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে উপজেলার ১৪৫টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছিল।