হবিগঞ্জের ৬ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত

5

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলার প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই জেলায় নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। বিশেষ করে ভাটি অঞ্চলখ্যাত আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা একেবারে পুরোপুরি বন্যার পানির নিচে রয়েছে।
হাওর এলাকা হওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। আর এতে করে ওইসব এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে উঠা মানুষদের মধ্যেও বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক। ইতোমধ্যে আজমিরীগঞ্জের জলসুখা সদর ইউনিয়ন এবং বদলপুর এলাকায় বেশ ক’টি আশ্রয় কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়াও নবীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, লাখাই উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও মাধবপুর উপজেলার ২টি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
যদিও জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলায় ১৭৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৩ হাজার ২৮৯ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারি হিসেবে পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা ১৬ হাজার ৮৫টি। কিন্তু এর বাস্তব চিত্র ভিন্ন। প্রকৃত পক্ষে জেলার ৬টি উপজেলার ৫০ শতাংশ এলাকা বন্যাকবলিত। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যাও হবে প্রায় দ্বিগুণ।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ১০ লাখ টাকা, ১৪৫ মেট্রিক টন চাল এবং ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দুর্গতদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। চিকিৎসার জন্য ২৯টি মেডিক্যাল টিম মাঠে কাজ করছে।
এদিকে গতকাল বুধবার সকাল থেকে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বন্যার্ত মানুষের দুঃখ অসহাত্বের চিত্র। মানুষজন গরু চাগল, হাস মুরগি নিয়ে ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। অনেকে আবার নিজ ঘরেই কোন রকম বাঁশ ইট দিয়ে একটু উচু করে তুলে রাখছেন প্রয়োজনীয় মূল্যবান জিসিনপত্র। দিন অথবা রাত বৃষ্টি হলেই যেন দুঃখ দুর্দশা আরো বেড়ে যাচ্ছে বানবাসি মানুষের মধ্যে। একই সাথে বিরাজ করছে পানি আরো বাড়ার আতঙ্ক।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি স্থির রয়েছে। মাঝেমধ্যে এক সেন্টিমিটার বাড়লেও আবার কমে যাচ্ছে। তবে নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার লোকালয়ে বন্যার পানি আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। হবিগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদীর পানি ছিল বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, বন্যার্তদের সব ধরণের সহযোগীতা করছে পাশে রয়েছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া মানুষদের দেয়া হচ্ছে ত্রান সহযোগীতা। সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি।