আত্মগোপনে থাকার ৬ মাস পর মৎস্য ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার

2

স্টাফ রিপোর্টার :
স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করে আত্মগোপনে চলে যাওয়ার ৬ মাস পর এক মৎস্য ব্যবসায়ীকে চট্টগ্রাম এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে সিলেট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত সোমবার চকবাজার থানার বাকলিয়া ডিসি রোডের চাঁন মিয়ার কলোনীর আমিনুর রহমানের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত মৎস্য ব্যবসায়ীর নাম- জুলমত আলী উরফে লাছু মিয়া (৪৬)। সে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ঘাটেরবাজার ঘিলাছড়ার পূর্ব যুধিষ্টিরপুর গ্রামের মৃত মবশ্বর আলীর পুত্র।
পিবিআই এর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ফেঞ্চুগঞ্জ সিআর মামলা নং-৭৭/২১ এর বাদীনি লিপি বেগম। তিনি ফেঞ্চুগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে অভিযোগ করেন, বাদীনির স্বামী চিংড়ি ব্যবসা করতেন। ঘটনার কিছু দিন পূর্ব হতে বিবাদী রুপই মিয়া, তখই মিয়া, জিলু মিয়া বাদীর স্বামীর নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে বিবাদীগণ নিজস্ব টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতন করবে। গত বছরের ৫ অক্টোবর বিকেল ৪ টার দিকে বিবাদীগণ বাদীনির ঘরের সামনে এসে বাদীনির স্বামীকে গালিগালাজ, চাঁদা দাবি, মারপিট শ্লীলতাহানি, চুরি ও ভাংচুর করে ক্ষতি সাধন করে। বিবাদীগণ চলে যাবার সময় বাদীর স্বামীকে অপহরণ করে টর্চার সেলে নিয়ে যায়। পিবিআই প্রধান বাংলাদেশ পুলিশ এর অতিঃ আইজি বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার) পিপিএম. সঠিক তত্ত্বাবধানে ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই সিলেট জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান এর নেতৃত্বে তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিঃ) শাহ মোঃ ফজলে আজিম পাটোয়ারী, কনেষ্টবল মিনহাজুল, পিবিআই সিলেট জেলার চৌকশ দল গত ২৯ মে সোমবার চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার থানাস্থ বাকলিয়া ডিসি রোড চাঁন মিয়ার কলোনী আমিনুর রহমান বাড়ি হতে চট্টগ্রাম পিবিআই টিমের সহায়তায় আত্মগোপনে থাবার ৬ মাস পর জুলমত আলী উরফে লাছু মিয়াকে উদ্ধার করা হয়।
পিবিআইর জিজ্ঞাসাবাদে উদ্ধারকৃত ভিকটিম জুলমত আলী উরফে লাছু মিয়া জানায়, তিনি ১০/১২ বছর পূর্বে দুবাই ছিলেন। দুবাই হতে এসে তিনি মাছ ধরার ছাই এর ব্যবসা করতেন। তিনি নরসিংদী দাউদকান্দির বাদশা মিয়ার নিকট হতে ৪০টাকা দরে ছাই ক্রয় করে জাফলং, দিরাই, বালাগঞ্জ এলাকায় ৬০/৭০টাকায় বিক্রি করতেন। বর্ষায় এই ব্যবসা করতেন। পরবর্তী সময়ে তিনি মাছের আড়ৎ থেকে মাছ এনে ভাটেরা বাজার, কুলাউড়ায় বিক্রি করতেন। মাঝে মধ্যে দোকান দিয়ে ছাই বিক্রি করতেন। ব্যবসা করার সময় তিনি রুপই মিয়ার নিকট হতে ৩০ হাজার টাকা, তখই মিয়ার নিকট হতে ৯৫ হাজার টাকা হাওলাত করেন। এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জের সাহেদা বেগম ১ লক্ষ টাকা কিস্তিতে তুলে তাকে ব্যবসা করার জন্য দেয়। তিনি ঐ টাকাগুলো মৌখিকভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এনেছিলেন এবং কিছু টাকা ফেরত প্রদান করেন। তিনি সমস্ত টাকা দিতে না পারায় কাউকে কোন কিছু না বলে তার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে ২ বছর পূর্বে বাড়ি হতে আত্মগোপনে চলে যান। তিনি চট্টগ্রামে গিয়ে রাজমিস্ত্রীর যোগালির কাজ করেন। ভিকটিম আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মাঝে মধ্যে স্ত্রীর গোপনীয় মোবাইল নম্বরে ভিকটিম অন্যের ব্যবহৃত মোবাইল দ্বারা যোগাযোগ করতেন ও পরিবারের লোকজনের খোঁজ খবর নিতেন। জুলমত আলী উরফে লাছু মিয়ার স্ত্রী লিপি বেগম এলাকার সুনু মিয়া, আনোয়ার হোসেন এর পরামর্শে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা দেয় উল্লেখিত বিবাদীদের বিরুদ্ধে। ভিকটিম আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।