স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমার পশ্চিমভাগ মৌজায় একদল দুষ্কৃতিকারী মায়ের মোহরানার জমি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন কুচাই পূর্বপাড়ার গৌছ উদ্দিনের পুত্র মঞ্জুর আহমদ। শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, আমাদের মালিকানাধীন ও আমার মায়ের মোহরানার ভূমি জবরদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন কিছু স্বজন। এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা ও সহযোগিতা চাইতে আজ সংবাদ সম্মেলন করছি।
লিখিত বক্তব্যে মঞ্জুর আহমদ বলেন, ‘আমার প্রয়াত দাদা জমশেদ আলী দক্ষিণ সুরমা উপজেলার পশ্চিমভাগ মৌজার জেল এল নম্বর ১০৪, এস এ খতিয়ান নম্বর ১৯৪, এসএ দাগ নম্বর ১১০৭ এর ১৭ শতক মৌরসি ভূমি থেকে ৮ শতক ভূমি আমার মা ছালেহা বেগম বরাবরে বিবাহের মোহরানা বাবদ ১৯৮১ সালের ১১ মার্চ সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ৬৮৭৮/৮১ নম্বর দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেন।’
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ ভূমি নির্বিঘ্নে ভোগ দখল করে আসছি। ভূমিতে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অধীনে গরু ও হাঁসের খামার রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে এ জায়গার উপর কুদৃষ্টি পড়ে কুচাই পূর্বপাড়ার মনির উদ্দিন, মো. ওয়ারিছ আলী, মনির উদ্দিনের ছেলে শফি আহমদ, সাজন আহমদ, জোছনা বেগম, আলী আহমদ ও নুরুল হকদের।
ভুয়া মাঠপর্চা তৈরি করে এ জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা পরস্পরের যোগসাজসে এসএ দাগ নম্বর ১১০৭, বিএস খতিয়ান নম্বর ৯৯৯ ও বিএস দাগ নম্বর ১৩৫৪-এর ৭ শতক ভূমি বিএস বুজরাত ভূমি উল্লেখ করে ৫ শতক ভূমি কুটু মনার স্ত্রী আলিক বানু (আলাপিনা বানু) এর নামে জাল জালিয়াতের মাধ্যমে একটি ভুয়া ও অস্তিত্বহীন জাল মাঠ পর্চা তৈরি করেন। এর মাধ্যমে আমাদের দখলীয় ও মালিকানধানী ১৩৫৪ দাগের ৭ শতক ভূমির মধ্যে ৫ শতক ভূমি প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাতের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ সুরমার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে মনির উদ্দিন ও জোছনা বেগম ভূমি গ্রহিতা এবং মো. ওয়ারিছ আলী ও কুটু মনা দাতা সেজে প্রতারণার আশ্রয় নেন এবং ভুয়া একটি সংশোধনীপত্র সম্পাদন করেন। যার নম্বর ৬৫৭/২০০৯।’
মঞ্জুর আহমদ জানান, এর প্রতিবাদ ও বিচার চাওয়ায় মো. মনির উদ্দিন স্থানীয় শালিস বিচার অমান্য করে উল্টো আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৩১/২০১৯। মামলার তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণে এসএ দাগ নম্বর ১১০৭, বিএস দাগ নম্বর ১৩৫৪ এর ৭ শতক ভূমিতে মনির উদ্দিন ও তার স্বজনদের কোনো প্রকার ভোগদখল বা মালিকানা স্বত্ব নেই বলে প্রমাণিত হয়। এ অবস্থায় তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট সিআইডি জোনের পুলিশ-পরিদর্শক মো. আব্দুল আউয়াল তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনÑ মনির উদ্দিন ও তার স্বজনরা পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ও ৩৪ ধারায় মনির উদ্দিন ও তার স্বজনরা অপরাধ করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।
মঞ্জুর আহমদ বলেন, ‘মনির উদ্দিন, মিনা বেগম, শফি আহমদসহ তার স্বজনরা মিলে আমাদের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা ও সাধারণ ডায়েরি করে চরম হয়রানির করে যাচ্ছে। তারা জ্বলন্ত একটি সত্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আদালতসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে তাদের দাবি সঠিক নয় প্রমাণিত হলেও তারা আমাদের পিছু ছাড়ছে না। আমাদের সম্পদ ছিনিয়ে নিতে তারা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করবে না।’
জীবনের নিরাপত্তার শঙ্কা প্রকাশ করার পাশাপাশি তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।