কাজিরবাজার ডেস্ক :
কারিগরি কমিটির সুপারিশ মেনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাসের দাম বাড়ালে বিদ্যুতের দামও বাড়বে। না বাড়িয়ে আর বিকল্প থাকবে না। কারণ, জ্বালানির দাম ১০ ভাগ বাড়লেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবদার করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। এবার কমিশন আবেদন মূল্যায়ন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের দাম ২০ ভাগ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
বিইআরসির কারিগরি কমিটি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা গ্যাসের দাম ২৫ ভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ৪ টাকা ৪৫ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। কারিগরি কমিটি তা বাড়িয়ে ৫ টাকা ৩৪ পয়সা করার সুপারিশ করেছে। প্রতি ঘনমিটারে বাড়বে ৮৯ পয়সা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবিত গ্যাসের দাম মূল্যায়নের জন্য কারিগরি কমিটি গঠন করেছে। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির প্রস্তাবিত দামের ওপর গণশুনানি হয়। সেখানে সুন্দরবন কোম্পানির প্রস্তাবিত দাম যাচাই করে কারিগরি কমিটি দাম বাড়ানোর সুপারিশ করে।
পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, কোনও কারণে জ্বালানির দাম ১০ ভাগ বেড়ে গেলে বিদ্যুতের দাম বদলাতে হবে। এক্ষেত্রে কমিশন কারিগরি কমিটির সুপারিশ আমলে নিলে গ্যাসের দাম ২০ ভাগ বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এর আগে আমরা গ্যাসের দাম বাড়ানোর আলোচনার শুরুতে যে আবেদন জমা দিয়েছিলাম তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, কোনও কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বিদ্যুতের দামও বাড়াতে হবে। না হলে সরকারকে বিপুল ভর্তুকি দিতে হবে।
এখম দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫৫ ভাগই গ্যাস দিয়ে উৎপাদন হয়। মোট ১৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ৫৭টিই গ্যাসচালিত। এরমধ্যে ৩০টি সরকারি ও ২৭টি বেসরকারি। সরকারি কেন্দ্রের মধ্যে পিডিবিরই আছে ১৮টি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, গ্যাসের দাম না বাড়ালে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি লাগবে পিডিবির। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের দাম বাড়লে এই ভর্তুকিও বাড়বে।
প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতেই গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো যখন গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিচ্ছিল তখনই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কমিশনকে চিঠি দেয় পিডিবি। পিডিবি তাদের চিঠিতে জানিয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন তাদের লোকসান হচ্ছে। এর মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়লে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও বাড়বে।
পিডিবি পাইকারি দামে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে। বিতরণ কোম্পানি সেটা খুচরা দামে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে।
এর আগে ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা দাম বাড়ানো হয়। সে সময় পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে ইউনিট প্রতি ৫ টাকা ১৭ পয়সা করা হয়। একই সময় গ্রাহক-পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা করা হয়।