স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর একটি বাসায় বান্ধবীর পাতা ফাঁদে পা দিয়ে নিজের সঙ্গম হারাতে বসেছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এক ছাত্রী (২১)। তবে বিষয়টি বুঝতে পারায় এবং পুলিশের তৎপরতায় ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেলেন ওই তরুণী। বুধবার ৫ জানুয়ারি রাতে নগরীর একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে।
জানা যায়, ফাঁদ পেতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার তরুণী সোনিয়া বেগম তার প্রবাসী চাচাতো ভাই আবদুল হাই (৩৮)-এর হাতে কৌশলে ওই ছাত্রীকে তুলে দেন। বুধবার (৫ জানুয়ারি) সোনিয়া ওই ছাত্রীকে জানান, তার চাচা-চাচি যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিলেটে এসেছেন। নগরীর একটি বাসায় তারা থাকছেন। তাঁদের বাসায় সোনিয়া বুধবার রাতে থাকবেন। বান্ধবীকেও (ভিকটিম) তার সঙ্গে থাকতে জোর খাটান।
বান্ধবীর আবদারে তার সঙ্গে ওই বাসায় যান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ওই ছাত্রী। কিন্তু সেখানে চাচা-চাচি নন, ছিলেন ওই বান্ধবীর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী চাচাতো ভাই। কিছুক্ষণ পর ওই প্রবাসী আবু আহমদ নামে তার এক খালাতো ভাইকে ওই বাসায় ডেকে আনেন। পরে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে এক কক্ষে প্রবাসী ও তাঁর খালাতো ভাই ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান।
ওই ছাত্রী সেই কক্ষ থেকে দৌঁড়ে গিয়ে পাশের কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে তিনি মুঠোফোনে বিষয়টি তাঁর এক ছেলে সহপাঠীকে জানান। এরপর ওই সহপাঠীর মাধ্যমে খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ওই ছাত্রীর বান্ধবী সোনিয়া ও প্রবাসীর খালাতো ভাই আবু আহমদ (৩৫)-কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে সোনিয়ার প্রবাসী চাচাতো ভাই আবদুল হাই (৩৮) পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সোনিয়া, আবদুল হাই ও আবু আহমদ ওই ছাত্রীকে কৌশলে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ান। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই ছাত্রী তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীর মাধ্যমে আমাদের খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার এবং সোনিয়া ও আবু আহমদকে গ্রেফতার করি। তিনি জানান, প্রবাসী আবদুল হাই সোনিয়ার আপন চাচাতো ভাই নয়। আমরা ধারনা করছি- সোনয়িা ফাঁদ পেতে এভাবে আবু আহমদের হাতে তরুণীদের তুলে দেন।
এদিকে, বুধবার রাত ৯টার দিকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। তবে তিনি অসুস্থ বোধ করায় রাতে এবং বৃহস্পতিবার দিনেও তাঁর কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারেনি পুলিশ।
অপরদিকে, গ্রেফতারকৃত দুজনকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।