এশিয়ায় সরবরাহ সংকট ॥ চালের দাম আরও বাড়তে পারে

55

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু করেছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম রফতানিকারক দেশ ভিয়েতনাম। অভ্যন্তরীণ বাজারে গত নয় বছরের মধ্যে চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ ঠিক রাখতে চাল রফতানিতে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতের বাজারমুখী হয়েছে দেশটি। ভারতের চার কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা জানিয়েছেন, ভিয়েতনামের এই ক্রয়ের মাধ্যমে এশিয়ায় চাল সরবরাহের সংকট প্রকাশ হয়ে পড়ছে। এর কারণে যেসব ক্রেতা সাধারণত থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে চাল কিনে থাকে তারাও ভারতের দিকে ঝুঁকতে পারে। ফলে এই বছর চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রফতানিকারক দেশ ভারত। চাল রফতানির বিষয়ে দিল্লির শিল্প মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ৭০ হাজার টন চাল রফতানির চুক্তি করেছেন। প্রতি টন প্রায় ৩১০ মার্কিন ডলারে বিক্রি করবে তারা।
সোমবার চাল রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বি.ভি কৃষ্ণ রায় সোমবার বলেন, প্রথম বারের মতো আমরা আমরা ভিয়েতনামে রফতানির আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘ভারতীয় দাম খুবই আকর্ষণীয়। দামের বিপুল পার্থক্যের কারণেই রফতানি সম্ভব হচ্ছে।’ সরবরাহে ঘাটতি আর ফিলিপাইন চাল কেনা অব্যাহত রাখায় ভিয়েতনামে চালের দাম নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি।
ভিয়েতনাম পাঁচ শতাংশ ভাঙা চালের দাম হাঁকছে ৫০০ থেকে ৫০৫ মার্কিন ডলার। বিপরীতে ভারত এই চালের দাম রাখছে ৩৮১ থেকে ৩৮৭ ডলার।
কম সরবরাহের কারণে সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলেও খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ওই অঞ্চলে খাবারের চাহিদা বেড়েছে। মারাত্মক ক্ষুধাও বেড়েছে। ফলে প্রায় প্রতিটি দেশের দুর্বল বাড়িগুলোতে এর প্রভাব পড়ছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে কমে গেছে আয়, বিঘ্নিত হয়েছে সরবরাহ শৃঙ্খল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহামারির কারণে ভিয়েতনামসহ আরও বহু দেশ চাল মজুত করেছে। গত বছর ভিয়েতনাম ঘোষণা করে যে তারা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই লাখ ৭০ হাজার টন চাল মজুত করবে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২০ সালে ভিয়েতনামের ধান উৎপাদন এই বছর এক দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই বছর দেশটির চাল রফতানি তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ নেমে যেতে পারে।
এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে ভারতে বেড়েছে চালের দাম। তারপরও এখনও দেশটিতে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওলাম ইন্ডিয়া’স রাইস বিজনেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিতিন গুপ্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল আমদানিকারক দেশ চীন গত ডিসেম্বরে ভারত থেকে চাল কেনা শুরু করে। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের চেয়ে কম দামে পাওয়া যাওয়ায় গত তিন দশকের মধ্যে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু করে চীন।