স্টাফ রিপোর্টার :
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২’র নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কথিত এক যুবলীগ নেতা। এ সময় প্রকৌশলীর কক্ষেই উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের ২ সাধারণ সম্পাদক।
গত মঙ্গলবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে সিলেট নগরীর মিরাবাজার এলাকার পিডিবি বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার এ ঘটনায় প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন সিলেটের কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন জিডিতে উল্লেখ করেন, গত মঙ্গলবার ২১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শামস-ই আরেফিনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে যান সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ এবং অজ্ঞাত আরও একজন। তাদের প্রবেশের ১০ মিনিট পর নগরীর উত্তর বাগবাড়ি এলাকার যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে মো. শামীম আহমদ নামে একজন প্রকৌশলীর কক্ষে ঢুকে পড়েন। সবার সঙ্গে কথার এক পর্যায়ে কথিত যুবলীগ নেতা শামীম আহমদ বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন কাজের টেন্ডার সংক্রান্ত গোপনীয় কাগজপত্র দেখতে চান। তখন শামস-ই আরেফিন এসব দেখাতে অসম্মতি জানালে শামীম আহমদ তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং অফিসের বাইরে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
এ অবস্থায় জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আছেন উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় বুধবার ২২ ডিসেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরি (নং- ২১৯৩) করেন শামস-ই আরেফিন। পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন বলে তিনি জিডিতে উল্লেখ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন বলেন, ছাত্রলীগের দুই নেতা সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য আমার অফিসে আসেন। তাদের আসার প্রায় ১০ মিনিট পর যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে মো. শামীম আহমদ নামে একজন আসেন। তিনি আমাদের অফিসের টেন্ডার সংক্রান্ত বিভিন্ন গোপনীয় কাগজপত্র দেখতে চান। আমি দেখাতে অসম্মতি জানালে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি তার মোবাইলে আমার একটি ছবি দেখিয়ে বলেন চেহারা মিলেছে, তোমাকে দেখে নেব। তিনি বলেন, আমি আমার বউ বাচ্চা নিয়ে সিলেটে বসবাস করি। এখন যদি সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার পরিবারকে আক্রমণ করে। তাই আমি জিডি করেছি।
এ ব্যাপারে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ বলেন, এ ঘটনার সাথে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ওই সময় আমাদের ব্যক্তিগত কাজে ওই অফিসে গিয়েছিলাম। তখন ওই লোকও (শামীম) কক্ষে প্রবেশ করেন। আমরা তাকে চিনি না। কথাবার্তার এক পর্যায়ে ওই লোক আর প্রকৌশলীর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। তখন আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি ও ওই লোককে অফিস থেকে চলে যেতে বলি।
শামীম আহমদের যুবলীগ নেতার পরিচয় নিয়ে তিনি বলেন, আমরা হচ্ছি ছাত্রলীগের নেতা। আর তিনি পরিচয় দিয়েছেন যুবলীগের নেতা। স্বাভাবিকভাবেই তিনি আমাদের চেয়ে বড় জায়গায় আছেন। তাই তার পরিচয় নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন জিডি করেছেন। আমরা তদন্ত করছি। তবে প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্তের ব্যাপারে ভাল কোনো খবর আসেনি। তার সম্পর্কে এলাকার সবাই ভাল কিছু বলেনি। যতটুকু বুঝতে পেরেছি তিনি সবসময় সরকারি দলের নেতা। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আছে। তদন্ত সাপেক্ষে শামীমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. শামীম আহমদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।