মুক্তিযোদ্ধাদের উপর হামলাকারীর শাস্তি চাই

6

মুক্তিযোদ্ধারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের অকুতোভয় লড়াই-সংগ্রাম এবং ত্যাগের বিনিময়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, নিজস্ব মানচিত্র ও পতাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশকে আমরা হারিয়েছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে। শহীদ হয়েছেন তারা। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলজুড়ে মিশে আছে তাদের পবিত্র রক্তের ধারা। যারা রণাঙ্গন থেকে ফিরেছিলেন বিজয়ীর বেশে তাদেরও অনেকেই শরীরে যুদ্ধক্ষত নিয়ে জীবন কাটিয়েছেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীন দেশেও নানা দুঃখ-কষ্ট ও অভাব-অনটনের ভেতর দিয়ে গেছেন। কেননা, স্বাধীনতা অর্জনের কয়েক বছরের মধ্যে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে দেশের শাসনক্ষমতা দখল করে নিয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। তারা নানা কৌশলে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে। এমনকি জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। জিয়াউর রহমান সশস্ত্র বাহিনীর অভ্যন্তরে বহু মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসি দিয়েছে রহসনের বিচারে। পরবর্তী শাসকরাও নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই শুরু হয় রায় ভূলুণ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নবজাগরণ। মুক্তিযোদ্ধারা পরম স্বস্তি লাভ করেন একাত্তরের ঘাতক-দালালদের রকাশ্যে বিচারের সম্মুখীন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করায়। মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনে বড় সান্ত্বনা এটাই যে, তারা জীবদ্দশায় স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক রাজাকার-আলবদরদের দন্ড পেতে দেখেছেন।
এরপরও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, কোন কোন সময় একাত্তরের ঘাতক-দালাল ও তাদের বংশধররা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আঘাত হানছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন অভিযোগ করেন, বুধবার রাতে মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার নির্দেশে তার ছেলেসহ রায় ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনাল আদালতে মহেশখালীর রাজাকারদের বিরুদ্ধে বাদী হওয়ার জের হিসেবেই এই হামলা। স্থানীয়দের বক্তব্য থেকে হামলার নেপথ্য প্রেক্ষাপটও উঠে এসেছে। মকছুদ মিয়ার ক্যাডাররা গতমাসের ১৯ তারিখে আমজাদ হোসেনের চিংড়ি রকল্পে লুটপাট চালায়। থানায় মামলা না নেয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হলে বিচারক এজাহারটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে মহেশখালী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আশা করব স্বল্পতম সময়ের ভেতর স্থানীয় প্রশাসন হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলাকারীদের ক্ষমা নেই।