জাতির জন্য পরম স্বস্তিকর সংবাদ হলো সঙ্কটের মধ্যেও বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো করোনার পাঁচ কোটি টিকা দানের মাইলফলক অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার দেশব্যাপী একযোগে ৭৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দানের এক বিরাট কর্মযজ্ঞ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায় ২৫ বছরের উর্ধে ব্যক্তিদের দেয়া হয় ভ্যাকসিন। উল্লেখ্য, বিভিন্ন উৎস থেকে এ পর্যন্ত দেশে মোট টিকা এসেছে প্রায় পাঁচ কোটি ডোজ। রবিবার দেশে এসে পৌঁছেছে ফাইজারের আরও ২৫ লাখ ডোজ টিকা। এতে দেশে এখন মোট টিকাপ্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা অতিক্রম করেছে পাঁচ কোটির মাইল ফলক। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা রফতানি বন্ধের পর টিকা প্রদান কার্যক্রম অনিশ্চয়তার কবলে পড়লেও এ রকম অর্জনকে মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করা যায়। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন উৎসসহ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে আরও ১০ কোটি টিকাসহ মোট ২৪ কোটি টিকা কেনার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। যা সরকারের সফল কূটনৈতিক তৎপরতার ফল হিসেবেই দেখছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এসব টিকা প্রাপ্তিসাপেক্ষে খুব শীঘ্রই বড় পরিসরে আবারও টিকাদান কর্মসূচী পরিচালনা করার কথা ভাবছে সরকার।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই বর্তমান জনকল্যাণমূলক সরকার তা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ব্যাপারে সক্রিয় রয়েছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের সাধারণ মানুষ যখন করোনার ভ্যাকসিন পায়নি, সেই সময়ে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটে (আইভিআই) আনুষ্ঠানিকভাবে দুই মাস আগেই যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে ভ্যাকসিন গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর করা সম্ভব হবে আগামীতে। গত মাসেই দেশব্যাপী করোনা প্রতিরোধে টিকা ক্যাম্পেন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৬ দিনব্যাপী ক্যাম্পেনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য থাকলেও টিকা পেয়েছেন এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ।
চলতি বছরের মধ্যেই দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে ২৪ কোটি ৩০ লাখ ডোজ টিকাপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা রয়েছে। এর মধ্যে চীন থেকে ৭ কোটি ডোজ ও ডব্লিউএইচও থেকে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডোজ টিকা কেনার চুক্তি হয়েছে। এ ছাড়া কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির আওতায় আরও ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে। তাই টিকার কোন সঙ্কট হবে না। ভারত থেকেও চুক্তিমাফিক এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে অক্টোবরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা লক্ষ্য পূরণ করতে পারব।
তাই টিকা আমদানি ও সংগ্রহই শুধু নয়, দেশেও করোনার টিকা তৈরি হবে আগামী দিনে, এমন প্রত্যয় রয়েছে দেশের মানুষের।