জগন্নাথপুরে জলমহাল নিয়ে বড় ধরণের সংঘর্ষ থেকে রক্ষা

5

জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুরে শালিসি ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বড় ধরণের সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পেয়েছেন দুই পক্ষের লোকজন। এতে স্থানীয় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের তেলিকোনা গ্রাম এলাকার কামারখালি নদী পাড়ে।
স্থানীয়রা জানান, তেলিকোনা থেকে দাস নোয়াগাঁও পর্যন্ত কামারখালি প্রথমখন্ড নামে একটি নদী রকম উন্মুক্ত জলমহাল রয়েছে। নদীটি প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য হবে। এ নদীটি প্রতি বছর মাছ আহরণের জন্য সরকারি ভাবে টোকেন ফি প্রদান করা হয়। গত ২ বছর আগে এ নদী রকম জলমহাল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অসংখ্য মানুষ আহত হন।
এ বছর টোকেন ফি প্রথায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক কর্তৃক স্থানীয় ১৯৮ জন তালিকাভুক্ত মৎস্যজীবী টোকেন ফি পান। এসব মৎস্যজীবীদের মধ্যে মাতাব মিয়ার নামে টোকেন ফি প্রদান করা হয়। প্রথমে জলমহাল টোকেন ফি পাওয়ার আগে সকল মৎস্যজীবী ঐক্যবদ্ধ থাকলেও টোকেন ফি পাওয়ার পর তাদের মধ্যে গ্রুপিং দেখা দেয়। বর্তমানে টোকেন ফি প্রাপ্ত মাতাব মিয়া মৎস্যজীবীদের একাংশ নিয়ে জলমহাল ফিশিং করতে চাইছেন। এতে বঞ্চিত মৎস্যজীবীরা প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এর মধ্যে ২৬ সেপ্টেম্বর রবিবার মাতাব মিয়ার লোকজন নদীতে বাঁশ-কাটা লাগাতে চাইলে বঞ্চিতরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সংঘর্ষের রূপ নেয়। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফখরুল হোসেন, আবদুস সোবহান, ইউপি সদস্য আছাদ মিয়া, তেরা মিয়া, লিটন মিয়া সহ শালিসি ব্যক্তিরা এগিয়ে যান। এ সময় শালিসি ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। তা না হলে বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতো বলে প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান।
এ বিষয়ে প্রতিবাদী মৎস্যজীবীদের মধ্যে শামসুল হক বলেন, আমরা অসহায় মৎস্যজীবীরা এ নদী থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করি। এ বছর আমরা তালিকাভুক্ত ১৯৮ জন মৎস্যজীবী নিজেদের টাকা-পয়সা খরচ করে টোকেন ফি পেয়েছি। আমাদের মধ্যে মাতাব মিয়ার নামে টোকেন ফি প্রদান করা হয়। জলমহালটি টোকেন ফি পাওয়ার পর মাতাব মিয়া আমাদের সাথে প্রতারণা শুরু করেন। তিনি কিছু মৎস্যজীবীকে সাথে নিয়ে একটি প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় আমরা শতাধিক প্রকৃত তালিকাভুক্ত মৎস্যজীবীকে বঞ্চিত করে জলমহালটি ফিশিং অথবা অন্যত্র বিক্রি করতে চাইছেন। এতে আমরা প্রতিবাদী হলে মাতাব মিয়া বাদী হয়ে আমি সহ ১৭ জন মৎস্যজীবিকে আসামী করে চাঁদাবাজি মামলা করেছেন। এমতাবস্থায় আমরা অসহায় মৎস্যজীবিরা প্রশাসনের কাছে সু-বিচার কামনা করছি।
তবে মাতাব মিয়া জানান, আমার লোকজন নদীতে কাটা লাগাতে গেলে শামসুল হকের লোকজন বাধা দেয়। এতে উত্তেজনা হলেও কোন সংঘর্ষ হয়নি। পঞ্চায়েতি লোকজন তা সমাধান করে দিয়েছেন। পরে নদীতে আর কাটা লাগানো হয়নি। শালিসি ব্যক্তিদের মধ্যে কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফখরুল হোসেন বলেন, জলমহাল নিয়ে এ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের অবস্থা ছিল। আমরা শালিসি ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে সংঘর্ষ থেকে রক্ষা হয়েছে।