জুড়ী থেকে সংবাদদাতা :
দেশে প্রতিদিন বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায়ও ক্রমাগত বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। জুড়ীতে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের হার প্রায় ৭০%। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে চলছে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন। কঠোর লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। মালেক মিয়া একজন রিকশাচালক। লকডাউনের পূর্বে প্রতিদিন মালিককে জমার টাকা দিয়ে অবশিষ্ট ৩০০-৪০০ টাকা আয়ে ভালোই চলছিল তার ৪ সদস্যের পরিবার। কিন্তু সরকারঘোষিত লকডাউনে রিক্সা চললেও নেই আগের মত আয়-রোজগার। আয়-রোজগার তেমন না থাকায় সংসার চালাতে বর্তমানে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
শুধু মালেক মিয়া নয়, লকডাউন এর কারণে রিক্সাচালক ও বিভিন্ন যানবাহনের শ্রমিকসহ নিম্নআয়ের মানুষজন পড়েছে মহাবিপদে। বিশেষ করে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকায় এসব যানবাহনের সাথে জড়িত শ্রমিকেরা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি সংকটে। আয়-রোজগার একেবারে কমে যাওয়ায় নিম্নআয়ের এসব মানুষের চোখে-মুখে এখন হতাশার ছাপ। নিম্নআয়ের মানুষের কপালে এখন শুধুই দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
লকডাউনের কারণে নিম্নআয়ের মানুষের মুখে এখন শুধুই হতাশার চিহ্ন। উপজেলার হতদরিদ্র অসহায় মানুষ এই লকডাউনে ভুগছে চরম খাদ্যসংকটে। লকডাউনের ফলে বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষ জনের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অনেকের ঘরে নেই খাবার। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করছেন তারা। লজ্জায় চাইতেও পারছেন না কারো কাছে।
প্রসঙ্গত: ১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই এবং সর্বশেষ গত ২৩ জুলাই থেকে চলছে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন। লকডাউনের সময় যত বাড়ছে, ততই খাদ্যসংকটে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষেরা। সকালে ঘর থেকে কাজের সন্ধানে বের হয়ে সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর দিন শেষে উপার্জিত অর্থ দিয়ে পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটানোই হলো নিম্নআয়ের পরিবারের কর্তার প্রধান কাজ। রাতে ঘুমানো, পরদিন আবারও কাজে যাওয়া- এই টেনশন যেন তাদের নিত্যদিনের। কঠিন জীবন চক্রের মধ্যে থাকা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা এদেশে নেহায়েত কম নয়। যাদের নেই কোনো সঞ্চয় বরং আছে ঋণের বোঝা! এমন অবস্থায় সরকারসহ বিত্তবানদের ত্রাণ সহায়তা এখন নিম্নআয়ের মানুষের নিশ্চুপ আকুতি।
জুড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বলেন, বর্তমান কঠোর লকডাউনে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা ইতোমধ্যে আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। আমরা তালিকা করে নিম্নআয়ের মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেবো। এছাড়াও যাদের ঘরে খাবার নেই তারা ৩৩৩ নম্বরে কল করলে আমরা ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি।