স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার এলাকার রাজা ম্যানশন নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধ ও অপকৌলের আশ্রয় নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছেন দোকান মালিকরা। বুধবার নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান রাজা ম্যানশন দোকান মালিক সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। এ সময় তারা মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ নয় এবং তা ভেঙে ফেলার প্রয়োজন নেই দাবি করে বলেন, রাজা ম্যানশন নিয়ে ভবন মালিক তথা জমিদার মিথ্যাচার করছেন। তিনি কাউকে কিছু না বলে এবং আলোচনা না করেই সংবাদ সম্মেলন করে মার্কেট খালি করার নির্দেশনা দিচ্ছেন। যা অত্যন্ত দুঃখ্যজনক।
লিখিত বক্তব্যে কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক বলেন, মার্কেটের মূল মালিক দেওয়ান তৈমুর রাজা চৌধুরীর কাছ থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত দোকানকোটা বিভিন্ন সময়ে স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত নেওয়া হয়। ৪০-৪৫ বছর ধরে সেখানে ব্যবসা করে আসছেন পুস্তকসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা হোল্ডিং টেক্সসহ অন্যান্য টেক্স পরিশোধও করে আসছেন। সম্প্রতি মার্কেটের উত্তরাধিকার দেওয়ান শমশের রাজা চৌধুরী, দেওয়ান শাহীন রাজা চৌধুরী ও দেওয়ান শাহবাজ রাজা চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে বিভ্রান্তি ছড়ান। তারা কোনো আলোচনা না করেই মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে খালি করা ও সেখানে আধুনিক বিপনীবিতান করার ঘোষণা দেন। অথচ ২০১৬ সালের একটি নোটিশে অনুমান করে মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছিল। সম্প্রতি ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন জরিপ ও পরীক্ষা করে প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ভবনটি রেক্টোফিটিং করে এর স্থায়িত্ব বাড়ানো যাবে। সয়েল টেস্টের পরীক্ষাও মার্কেটের অনুকূলে।
সংবাদ সম্মেলনে দোকান মালিকরা জানান, রাজা ম্যানশন ভেঙে আধুনিক মার্কেট করতে তাদের আপত্তি নেই। কিন্ত তার আগে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করতে হবে, এনিয়ে চুক্তি করতে হবে। হঠাৎ করে ভবন ভাঙতে চাইলে ব্যবসায়ীরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, গত ২১ ও ৩০ মে সিলেটে একাধিকবার ভূমিকম্পের পর সিটি করপোরেশন ভবনটি ঝুকিপূর্ণ উল্লেখ করে ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দেয় স্বীকার করে দোকান মালিকরা জানান, সিটি মেয়রের চিঠির প্রেক্ষিতে ভবনটি সংস্কার করা হচ্ছে। বন্দোবস্ত দলিলের ৫ নং ধারায়ও ছোটখাটো সংস্কার করার অধিকার তাদের রয়েছে। অথচ জমিদার ভবনটি সংস্কার উপযোগী নয় দাবি করে ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করছেন। একবারও তিনি বিষয়টি বন্দোবস্ত গ্রহিতাদের অবগত করেন নি। এমনকি ভেঙে ফেলার পেছনে জমিদার কোনো প্রকৌশলীর মতামত দেখাতে পারেন নি। গত ১০ জুন সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী সরেজমিন পরিদর্শন করে রেক্টোফিটিং এর মাধ্যমে সংস্কার করা সম্ভব সবলেও মতামত প্রদান করেন।
মার্কেটের ১৮৭ দোকানের বিপরীতে জমিদার মাত্র ৫০ হাজার টাকা ভাড়া পান এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে দোকান মালিকরা জানান, স্থায়ী বন্দোবস্ত গ্রহিতারা নামমাত্র জমিদারি দেন। এটা সিলেটের অন্য মার্কেটেরও নিয়ম। ১০ বছর পর সেই জমিদারি ভাড়া ২৫ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়। সে অনুযায়ী জমিদার ভাড়া পাচ্ছেন। কেউ কোনো টেক্স ফাঁকি দিচ্ছেন না। দোকান মালিকরা জমিদারের মিথ্যাচার বন্ধ ও নানা অপকৌলের আশ্রয় নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে উল্লেখ করেন, রাজ্য ম্যানশনের উত্তরাধীকারের অসহযোগিতার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার তাদেরকেই নিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, দোকান মালিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন চৌধুরী, মো. আবুল বশর, শাহ মো. মতছির আলী, মাহবুবুল আলম মিলন, গুলজার আহমদ, তৈয়বুর রহমান নানু, মাসুদ হোসেন খান, তানভীর হোসেন রহিম প্রমুখ।