স্টাফ রিপোর্টার :
করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেটে গত এক মাসে (এপ্রিল) সর্বোচ্চ ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে মারা গেছেন ২৫ জন।
এর আগে সিলেটে করোনার সংক্রমণ শনাক্তের পর এক মাসে সর্বোচ্চ ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল গত বছরের জুলাইয়ে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ২৭৮।
সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা জানান, সংক্রমণ শুরুর পর অনেকেই ভয় ও অজ্ঞতার কারণে দেরিতে চিকিৎসা কেন্দ্রে আসতেন। সম্প্রতি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। আগের তুলনায় মানুষ সচেতন হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন। কিন্তু মৃত্যুর হার কমছে না। এর কারণ বর্তমানে করোনার যে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, তা আগের তুলনায় শক্তিশালী।
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেট জেলায় প্রথম করোনায় সংক্রমিত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এর ১০ দিন পর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত বছরের এপ্রিল থেকে মে এই দুই মাসে জেলায় মারা যান ১৩ জন। এরপর থেকে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
গত বছরের জুনে ৪৫, জুলাইয়ে ৪৭ জন মারা যান। এরপর মৃতের সংখ্যা কমতে থাকে। আগস্টে ২৭, সেপ্টেম্বরে ২২, অক্টোবরে ১১, নভেম্বরে ১২ ও ডিসেম্বরে ১৮ জন মারা যান। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ সংখ্যা আরও কমে। জানুয়ারিতে ১২, ফেরুয়ারিতে ৩ ও মার্চে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫।
এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কথা হয় সিলেটে করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা চয়ন রায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, সংক্রমণের প্রথম দিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের আলাদা অক্সিজেন সরবরাহের তেমন প্রয়োজন হতো না। ৮০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে এলে ৩০ থেকে ৩৫ জনকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হতো। তবে বর্তমানে ৮০ জন চিকিৎসা নিলে ৬৫ থেকে ৭০ জনকেই অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত বলেন, বর্তমানে করোনার যে সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে সেগুলো বিভিন্ন দেশে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও গবেষণা ছাড়া এটি সুনির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। জন্মেজয় দত্ত বলেন, মৃতের সংখ্যা বাড়লেও বর্তমানে করোনা শনাক্তের হার নিম্নগতির দিকে। লকডাউনের প্রভাবে সংক্রমণ ও শনাক্তের হার নিম্নমুখী হয়েছে। এখন মানুষ যদি আবার স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করতে শুরু করেন তাহলে সংক্রমণও আবার বাড়বে।