পবিত্র শবে বরাত

11

আজ পবিত্র শবে বরাত। শবে বরাত কথার অর্থ সৌভাগ্য রজনী। পবিত্র কোরআন শরীফে এই রাতকে বলা হয়েছে ‘লায়লাতুল মুবারাকাতুন’ অর্থাৎ, শুভ রজনী বা মঙ্গলময় রাত। প্রতিবছর শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাতই হচ্ছে এই সৌভাগ্য রজনী। রাসূলে করিম (সা.) বলেন, এই পবিত্র রাতে সমগ্র দুনিয়াবাসীর জন্য আল্লাহ্ পাকের করুণা বর্ষিত হয়। শব-ই-বরাতের পবিত্র রাতেই মানব জাতির জন্য লেখা হয় আমলনামা। যারা পরবর্তী বছর জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করবেন তাঁদের তালিকাভুক্ত করা হয় এ রাতে। আর এ কারণেই এ রাতকে বলা হয় ভাগ্য নির্ধারণের রজনী। পবিত্র এ রাতে কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে অনুশোচনার সঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি ক্ষমা করে থাকেন। যারা এই পবিত্র রাতে বিনিদ্র থেকে একাগ্রচিত্তে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার এবাদত বন্দেগি করবেন, তাঁদের সকল গুনাহর খাতা আল্লাহ মাফ করবেন। কবুল করবেন তাঁদের আন্তরিক প্রার্থনা এবং আশা-আকাক্সক্ষা। এ রাতের বরকত ও ফজিলতের ওপর গুরুত্বারোপ করে সিদ্দিকে আকবর, মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রা.) এবং পরবর্তীকালের সাধক, আলেম ও অলি-আল্লাহগণ বিশদ বিশ্লেষণমূলক অমূল্য বক্তব্য রেখেছেন। এই পবিত্র রাতে রাসূলে করিম (সা.) স্বয়ং গভীর এবাদতে মশগুল থাকতেন। তিনি এই রজনীর মহিমা বর্ণনা করে বলেছেন, লায়লাতুল বরাতের রাতের প্রথম ভাগে স্বয়ং আল্লাহ পাক প্রথম আসমানে অবতীর্ণ হয়ে বলেন, ‘কে আছ আমার প্রিয় বান্দা, যারা কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী, বিপদগ্রস্ত ও সুখ-শান্তির প্রত্যাশী এবং আখেরাতের মঙ্গল কামনাকারী? তোমরা এই ফজিলতের রাতে আমার কাছে ফরিয়াদ কর। আমি নিঃসন্দেহে তোমাদের ফরিয়াদ কবুল করে নেব।’
হাদিস শরীফে পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত ও মর্তবা সম্পর্কে অসংখ্য বর্ণনা আছে। পবিত্র এ রাতে নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তেলাওয়াত ছাড়াও জিকির-আসকার, মোনাজাত ও গরীব-মিসকিনদের মাঝে দান-খয়রাত ইত্যাদির মধ্যে রয়েছে অশেষ সওয়াব ও বরকত।
এবার এই পবিত্র রাতটি এসেছে এমন এক সময়ে যখন বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব করোনাভাইরাস কবলিত, যা প্রাণঘাতী ও মহামারীসদৃশ। এই হন্তারক ব্যাধির বিরুদ্ধে কোন কার্যকর প্রতিষেধক না থাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সঙ্গনিরোধই সর্বোত্তম পন্থা বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। তবে দেশব্যাপী করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার স্বস্তিদায়ক খবরও আছে। তবু এই সঙ্কটময় সময়ে বাইরে না গিয়ে ঘরে বসেই এবাদত বন্দেগী করা শ্রেয় বলছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। এ বিষয়ে সরকার ও ধর্ম মন্ত্রণালয়েরও দিকনির্দেশনা রয়েছে। প্রকৃত মুসল্লিগণ সেটা অনুসরণ করবেন বলেই প্রত্যাশা।