দেশে ফিরে দলীয় নেতাদের প্রধানমন্ত্রী ॥ তারেক রহমানকে দেশে ফিরতেই হবে ॥ স্বপন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জেনে অবাক !

276

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে দেশে ফিরতেই হবে বলে দেশে ফিরে দলের নেতাদের জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা এগিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দেশে ফিরে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জেনে অবাকও হন শেখ হাসিনা। তার চেয়ে জ্যেষ্ঠ কেউ ছিল কি না, এই প্রশ্নও রাখেন তিনি।
আট দিনের সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে সোমবার সকালে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী। সৌদি আরবে সামরিক মহড়া এবং যুক্তরাজ্যে সাবেক ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দেশগুলোর মোর্চা কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফরে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর প্রসঙ্গ। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে সে দেশে অবস্থান করছেন। চিকিৎসা শেষে তার ফেরার কথা থাকলেও তিনি দেশে আসেননি।
এর মধ্যে দুর্নীতির দুই মামলায় তারেক রহমানের মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ২২ কোটি ১০ লাখ টাকারও বেশি জরিমানা হয়েছে। আর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড চেয়েঝে রাষ্ট্রপক্ষ।
চলতি বছরই ২১ আগস্ট মামলার রায় ঘোষণার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে আর সরকারও তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা জোরদার করেছে।
যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে দুইবার তারেক রহমানকে ফেরানোর বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ১৭ এপ্রিল এক মতবিনিময়ে তিনি বলেন, ‘তার (তারেক রহমান) উচিত আদালতের মুখোমুখি হওয়া। আমরা ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলছি। অবশ্যই একদিন আমরা তাকে ফেরত নেব।’
এরপর ২১ এপ্রিল যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের এক সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের কাছ থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে, যেভাবেই তারককে দেশে ফেরত নেবই নেব। ব্রিটিশ সরকারের সাথে আমি কথা বলেছি।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর গণভবনে দলের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় তারেক রহমানের দেশে ফেরানোর প্রসঙ্গটি নিয়ে আবার কথা বলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া এক নেতা বলেন, ‘আপা বলেছেন, ‘তারেককে দেশে ফিরে আসতেই হবে। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাহাবুদ্দিন ফরাজী শেখ হাসিনাকে এ সময় বলেন, ‘বিএনপির এক আইনজীবী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জাতির পিতার নাম পাল্টে ফেলবে।’
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২১ বছর বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু পারেনি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজাতে দেয়নি। আজকে এই ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।’
এ সময় দলের নেতাদের লেখালেখির মাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব দিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফলে আজকে সবাই এক ধরনের সাংবাদিক।’
স্বপন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কেন?
রবিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের ১৯ নেতা ভারত সফরে যাওয়ার পর দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদকে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানানো হলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তুমি! আর কেউ ছিল না?’
এ সময় জবাবে একজন বলেন, ‘আপা সবাই তো দেশের বাইরে।’
শেখ হাসিনা জানতে চান, ‘একজন জয়েন্ট সেক্রেটারিও দেশে নাই?’
না সূচক জবাব পেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ও সেজন্যই তুমি!’
শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবদুর রাজ্জাক, অসীম কুমার উকিল, ফরিদুন্নাহার লাইলী, শামসুন্নাহার চাঁপা, দেলোয়ার হোসেন, মারুফা আক্তার পপি, ইকবাল হোসেন অপু প্রমুখ।