কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট পৌরসভার নির্বাচন আর মাত্র ২দিন বাকি। ১৪ ফেব্রুয়ারি এ পৌরসভার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও ২ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে চতুর্থ মুখী হাড্ডা-হাড্ডি ভোটের লড়াই হবে বলে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। দলের পাশাপাশি আঞ্চলিকতা ভোটের লড়াইয়ে মেয়র প্রার্থীদের জয় পরাজয় নির্ধারন হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা পৌরএলাকা। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের নিয়ে শেষ পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা ও পথ সভা, উঠান বৈঠক, গণসংযোগ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বত্র ভোট নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা। নির্বাচনে মেয়র পদে ৬জন ও ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৯জন এবং সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ড থেকে ৯জন মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে কানাইঘাট পৌরসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ১৯,৪২৭জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছেন ৯,৮৮০ এবং মহিলা ভোটার হচ্ছেন ৯৫৪৭ জন। মেয়র পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর হাজী শরীফুল হক (ধানেরশীষ) প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন (নারিকেল গাছ), অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যবসায়ী সোহেল আমিন (জগ), কুয়েত প্রবাসী জামায়াত ঘরনার প্রার্থী কাওছার আহমদ (মোবাইল ফোন) ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফিজ নজির আহমদ (হাতপাখা) নিয়ে লড়ছেন। আওয়ামীলীগের প্রার্থী লুৎফুর রহমানের পক্ষে সিলেট জেলা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের কর্মীরা মরিয়া হয়ে প্রতিদিন প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনিপি সমর্থিত প্রার্থী শরীফুল হকের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দলের নেতাকর্মীদের প্রচারণা করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা প্রচারণায় পিছিয়ে নেই। তবে আওয়ামীলীগের তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মীদের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সোহেল আমিন ও বর্তমান মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিনের পক্ষে কাজ করতে দেখা গেছে। নানা সমিকরণে আওমীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়ে চমক দেখাতে পারেন। নির্বাচনে দলের বাহিরে এলাকা ও আঞ্চলিকতার টান ভোটের মাঠে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইতি মধ্যে নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করতে সিলেটের নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। সিলেট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম সকল ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা ও আইন-শৃংখলার বাহিনীর কর্মকর্তারা অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন। তারা ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্র উপস্থিত হয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছেন। নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী লুৎফুর রহমান। তিনি বলেন বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পৌরবাসী তাকে সমর্থন জানাচ্ছেন এবং তার প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করবেন। বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শরীফুল হক জানান তিনি যে দিকে যাচ্ছেন ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে নিরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমের তিনি বিজয়ী হবেন। অপর দিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র নিজাম উদ্দিন বলেন বিগত ৫ বছরে পৌরসভায় যে সমস্ত উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড হয়েছে তা বিগত ২৫ বছরেও হয়নি। উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড নিয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী লুৎফুর রহমান মিথ্যাচার করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছেন। পৌরসভার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সর্বস্তরের ভোটাররা তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিচ্ছেন তার বিজয় কেউ টেকাতে পারবে না। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আমিন বলেন পৌরসভার ভোটাররা এখন অনেক সচেতন। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে তারা নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে ভোট দিবেন। পৌরসভার সর্বত্র তার প্রতি জগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সেই জুয়ার অপপ্রচার করে এলাকার মানুষকে কেউ বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জনগণের ভোটে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী কুয়েত প্রবাসী কাওছার আহমদ বলেছেন তার প্রতি মোবাইল ফোনকে দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই সমর্থন জানাচ্ছেন। বিজয়ের ব্যাপারে তিনি বেশ আশাবাদী। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। প্রতিদিন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম পিপিএম বলেন পৌরসভার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর করতে এবং নির্বাচন নিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা যাতে করে কোন ধরনের আইনশৃংখলা পরিপন্থি কর্মকান্ড করতে না পারে এ জন্য পৌর এলাকায় পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে।