বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে এদেশে পশ্চিমা দখলকারীরা জোরপূর্বক বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখতে দীর্ঘ ২৩ বছর শাসন-শোষণ চালানোর প্রতিবাদে বাঙালি জাতি সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে বাঙালি জাতির সত্তা রক্ষায় আওয়ামী ণীগের নৌকা প্রতিকে সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোটে জয়ী হলেও পাকিস্তানি পশ্চিমা শক্তি আওয়ামীলীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি নিধনের প্রক্রিয়া শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে সারা বাংলার মানুষ জেগে উঠে। আওয়ামী লীগ প্রধান জাতির জনক বাঙালি জাতির স্বপ্নদষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা, ‘এবারের সংগ্রাম- স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম-মুক্তির সংগ্রাম’।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের এ ঘোষণার পরই বাংলার সাধারণ মানুষ জবর-দখলকারী পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। ২৫ মার্চের কালো রাতে হানাদার বাহিনী ঢাকসহ সারাদেশে বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়নসহ বাসা-বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ২৬ মার্চের গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাসা থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানে নিয়ে যায়। হানাদার বাহিনী নির্বিচারে বাঙালি নিধনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সহ এদেশীয় প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ন্যাপ, কমিউনিষ্ট পাটি, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ক্যান্টিন, অফিস আদালতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। তাদের সাথে হাত মেলায় এদেশীয় মৌলবাদি সম্প্রাদায়িক শক্তি জামায়াতসহ সুবিধাবাদী ধর্মভিত্তিক সংগঠন গুলো, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্, মুজাহিদ বাহিনীসহ সীমান্তিক এলাকায় খন্তি বাহিনী। এ বাহিনী গুলো গ্রামাঞ্চল থেকে শহরাঞ্চলে অপকর্ম চালিয়ে যায়।
দেশের ভিতরে ও ভারতে আশ্রয় নেয়া প্রায় সোয়া কোটি বাঙালি দীর্ঘ নয় মাস ভারতীয় মিত্র বাহিনীর যৌথ বাহিনী গঠন করে এবং ন্যাপ, কমিউনিষ্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন এর গেরিলা বাহিনী যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়।
মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের পর প্রায় অর্ধশতাধিক বছর পেরিয়ে গেলেও স্বাধীনতার ঘোষক বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ এখন হয়নি, এমনকি মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ না হওয়ায় মুক্তিকমী মানুষের মধ্যে গভীর কষ্ট রয়েছে। তাই স্বাধীনতা বিরোদ্ধীরা এখন ও তাদের বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে প্রতারণা শেষ হয়নি। এদের কালো হাত চিরতরে রুখতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে জাগ্রত করতে সকল ঐক্যবন্ধ হতে হবে।