ভূমিসন্তানের মানবন্ধনে বক্তারা ॥ উন্নয়নের নামে কনক্রিটের নগরী চাই না

8
সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অপরিকল্পিত ও বিধ্বংসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে ভূমিসন্তান বাংলাদেশ আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজে দুঃখ প্রকাশ করেন।

সম্প্রতি সময়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশন উন্নয়ন কর্মকান্ডের নামে অপরিকল্পিত ভাবে পরিবেশ ধ্বংসের যে ধারাবাহিক কার্যক্রম শুরু করেছে এতে সিলেটের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। সবুজ শ্যামল সিলেট থেকে হারিয়ে যাবে সবুজ। উন্নয়নের নামে কনক্রিটের নগর পরিণত হবে। তাই অবিলম্বে বৃক্ষকর্তনসহ পরিবেশবিধ্বংসী সকল কর্মকান্ড বন্ধ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ভূমিসন্তান বাংলাদেশের মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক উন্নয়নের নামে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের মাঝখানে অবস্থিত পুরনো একটি বৃক্ষ কাটার প্রতিবাদে ভূমিসন্তান বাংলাদেশের মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অতীতেও দেখেছি সিসিক কর্তৃপক্ষ উন্নয়নের নামে বৃক্ষকর্তন করেছে। সে সময় প্রতিবাদ করা হলে সিসিক মেয়র দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন এব কোন গাছ কাটা হলে পরিকল্পিত ভাবে কাটা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। সে লক্ষ্যে সবুজায়নের জন্য একটি কমিটিও করা হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে এ কমিটির আর কোন খবর নেওয়া হয়নি এবং একের পর এক পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এ সময় সম্প্রতি নগরীর ২১ নং ওয়ার্ডের অভ্যন্তরে একটি পুকুর ভরাট করার প্রতিবাদ করে বক্তারা বলেন, কিছুদিন আগে সিসিক থেকে উন্নয়নের নামে পুকুর ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো পুকুর ভরাট করে কিসের উন্নয়ন?
সিসিকের বিরুদ্ধে এ মানববন্ধনে উপস্থিত হন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজেই। তিনি মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনার দায় নিজের উপর নিয়ে আগামীতে এ ধরণের কাজের ক্ষেত্রে সকলের পরামর্শ নিয়ে করার আশ্বাস দিলেন। এমনকি তিনি সিলেট নগরকে সবুজায়নের জন্য নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সকলের সহায়তা চেয়ে বলেন, ইতোমধ্যে আমি নগরীর বেশ কয়েকটি দিঘি খননের প্রস্তাব দিয়েছি। নগরের সংস্কার করা প্রতিটি সড়কের আইল্যান্ডে গাছের চারা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছি। তাই গাছ কাটা হোক এটা আমিও চাই না। কিন্তু এখানে যে গাছটি কাটা হয়েছে এটা আসলে কোন ভাবেই কাম্য ছিল না। তাই আমি যখন জানলাম মানববন্ধনের কথা আমিও ছুটে এসেছি। এখানে এসে বৃক্ষের প্রতি ভালবাসা থেকে মানুষের উপস্তিতি দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করি আগামীতে যদি বিশেষ প্রয়োজনে গাছ কাটতেই হয় তাহলে যথাযথ পরিকল্পনা করে, আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ সময় মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামির মাহমুদ, সম্প্রতি গড়ে ওঠা নাগরিক প্লাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ এর সংগঠক রাজিব রাসেল প্রমুখ।
ভূমিসন্তান বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক আশরাফুল কবিরের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া মানববন্ধনের সঞ্চালনা করেন আবুবকর আল আমিন।
এ সময় সংহতি জানিয়ে উপস্তিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেটের সহ-সভাপতি শামসুল আলম সেলিম, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি মামুন হাসান, বাপা সিলেটের সদস্য সুপ্রজিত তালুকদার, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক নিরঞ্জন সরকার, ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সংগঠক আনিস মাহমুদ, রুবেল আহমদ কুয়াশা, উসা সিলেটের নির্বাহী পরিচালক নিগাত সাদিয়া, সারি বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুল হাই আল হাদি, পরিবেশ কর্মী শাহ সিন্দার শাকিল, ভূমি সন্তান বাংলাদেশের সংগঠক শাকিল আহমদ সুহাগ, প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেট’র সভাপতি তামান্না ইসলামসহ সদস্যরা। বিজ্ঞপ্তি