১২ দফা দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদ) সিলেট জেলার স্মারকলিপি পেশ

22

১২ দফা দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার উদ্যোগে রবিবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সদস্য এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, মুখলেছুর রহমান, রেজাউর রহমান রানা, সঞ্জয় কান্ত দাশ প্রমুখ।
এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশ আজ অস্থিতিশীল। মানুষের জানমালের ন্যুনতম নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ। করোনার এই দুর্যোগের মধ্যেও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লুটপাট-দুর্নীতি থেমে নেই। একদিকে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো-জনবল-চিকিৎসা সামগ্রী-প্রণোদনার ঘাটতি, স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকের আতঙ্কের কারণে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ঠিকমত হচ্ছে না। অন্যদিকে করোনাজনিত অর্থনৈতিক মন্দার অজুহাতে ছাঁটাই-বেতন কর্তন চলছে, বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বাড়ছে। প্রবাসীরা অনেকে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। করোনায় কর্মহীন মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিবর্তে ২৫টি রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ করে দিয়ে ৬০ হাজার শ্রমিককে এক ধাক্কায় বেকার করে দেয়া হয়েছে। এতে পাটের উপযুক্ত মূল্য না পেয়ে পাটচাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমজীবী মানুষ-কৃষক-নিম্নবিত্তকে সহায়তা দেয়ার পরিবর্তে সরকার প্রধানত শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাকালে আর্থিক দুর্দশায় পড়া নাগরিকদের বাড়ি ভাড়া-ইউটিলিটি বিল সরকার প্রদান করছে। অথচ, বাংলাদেশে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের বোঝা চাপানো হচ্ছে, পানির বিল-গাড়ি ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে, দুই মাস লকডাউনেই দেশের বেশিরভাগ পরিবার অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। করোনাকালে দেশের অর্ধেক মানুষই দারিদ্র্য সীমার নীচে নেমে গেছে বলে রিপোর্ট এসেছে বিভিন্ন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার জরিপে। আরেকদিকে, সরকার সমালোচনাকারীদের দমনে গ্রেফতার-নিপীড়ন চালাচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত ২ বছরে হাজারের বেশি মামলা হয়েছে, দেড় হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহার মৃত্যু, সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুসহ নানা সময়ে বিনা বিচারে মানুষ হত্যার ঘটনায় প্রমাণ হয় এদেশে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মানুষের জীবন কতটা নিরাপত্তাহীন। বেআইনী আটক, গুম, হয়রানিমূলক মামলা, পুলিশী হেফাজতে নির্যাতন, মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়, সভা-সমাবেশে বাধাদান এসব চলছেই। শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সকল রকম সেবাখাতকে বেসরকারিকরণ করে পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। এছাড়া নোয়াখালী, সিলেটসহ সারাদেশে অব্যাহত নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জনগণ আতঙ্কিত। সরকার এইসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং বিভিন্ন সময় এদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছে।
এই রকম পরিস্থিতিতে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি আদায় করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। বিজ্ঞপ্তি